মালদা-জলপাইগুড়িতে গোষ্ঠী কোন্দলে বিরক্ত অভিষেক, দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে কড়া বার্তা
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৭ আগস্ট ২০২৫
তৃণমূলের অন্দরে চলতে থাকা অন্তর্দ্বন্দ্ব ও নেতৃত্বের দ্বৈরথ থামাতে এবার কড়া বার্তা দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে মালদা ও জলপাইগুড়ি জেলার শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নিয়ে টানা ছ'ঘণ্টা ধরে দুটি পৃথক বৈঠকে দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় কড়া বার্তা দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।
মালদার বৈঠকে তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জেলার সাম্প্রতিক কোন্দল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। মানিকচক, হরিশ্চন্দ্রপুর ও ইংরেজবাজারে ঘন ঘন যে দলীয় সংঘর্ষের খবর উঠে এসেছে, তা নিয়ে স্পষ্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেন অভিষেক। তিনি জানিয়ে দেন, দলের কাছে প্রতিটি নেতার গতিবিধির খতিয়ান পৌঁছচ্ছে এবং গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বরদাস্ত করা হবে না। মানিকচকের গোপালপুরের ঘটনায় যুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপেরও বার্তা দেন তিনি। সভায় উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, তাজমুল হোসেন, প্রাক্তন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র, জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী সহ একাধিক বিধায়ক ও নেতারা। অভিষেক সাফ জানিয়ে দেন, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে ব্যক্তিগত প্রভাব খাটাতে গেলে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।
লোকসভা নির্বাচনে জেলার হতাশাজনক ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি তুলনামূলক বিশ্লেষণ টেনে ধরেন। ২০২১ সালে মালদা জেলার আটটি বিধানসভা আসন দখলে রাখা তৃণমূল ২০২৪-এ একটিতেও লিড নিতে পারেনি। বরং বিজেপি ও বাম-কংগ্রেস জোট ছ'টি করে আসনে এগিয়ে গিয়েছে। যা গোষ্ঠী কোন্দলেরই প্রতিফলন, মনে করেন অভিষেক। এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি জোরদার করার কথা বলেন তিনি। বুথভিত্তিক সংগঠন গড়ে তোলার নির্দেশ দেন এবং ব্লক স্তরের পরিবর্তন নিয়েও আলোচনা করেন। এর পাশাপাশি, তৃণমূল নেতৃত্বের হাতে থাকা একটি ভোটকুশলী সংস্থার রিপোর্টও বৈঠকে গুরুত্ব পায় বলে সূত্রের খবর।
জলপাইগুড়ির ক্ষেত্রে অভিষেক সমন্বয়ের উপর জোর দেন। জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ, যুব ও মহিলা শাখার নেতৃত্ব এবং চারজন বিধায়ককে নিয়ে আয়োজিত ওই বৈঠকে তিনি বলেন, দলের শৃঙ্খলা মানতেই হবে। কে কোথায় দাঁড়িয়ে তা নয়, সবাইকে দলীয় সিদ্ধান্তের অধীনেই কাজ করতে হবে।জলপাইগুড়ি শহরে গেরুয়া শিবিরের ভোটবৃদ্ধি নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় নেতাদের। সব শাখা সংগঠনকে সমন্বিতভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন অভিষেক। পাশাপাশি জেলার ব্লক স্তরে রদবদল এবং বুথ সংগঠন মজবুত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের কথা বলেন তিনি। দুই জেলার ক্ষেত্রেই অভিষেকের বার্তা স্পষ্ট, সংগঠনকে শক্তিশালী করাই এখন মূল লক্ষ্য।