সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্তার অভিযোগে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। তার প্রতিবাদে একাধিকবার সুর চড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবসে আরও একবার তোপ দাগলেন তিনি। শপথ নিলেন, “বাংলার উপর ভাষা সন্ত্রাস মানব না।”
ঝাড়গ্রামে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানের সূচনার আগে X হ্যান্ডেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, “বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ দিবসে আমাদের প্রাণের ঠাকুরকে জানাই আমার অন্তরের শ্রদ্ধা ও প্রণাম। বছরের প্রতিটি দিনে, প্রতিটি মূহূর্তে তিনি আমাদের ঘিরে রয়েছেন। বিশেষত, আজ শুধু বাংলা ভাষা বলার জন্য বাঙালির ওপর যখন সন্ত্রাস নেমে আসছে, তখন তিনিই আমাদের লড়াই করার প্রেরণা। রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষার সর্বকালীন শ্রেষ্ঠ প্রতিভা। আজ যখন তাঁর ভাষার ওপর আক্রমণ নেমেছে, তখন আমরা দু:খিত, ব্যথিত, মর্মাহত। “চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির”, সেই ভারতের নির্মাণে রবীন্দ্রনাথ-ই আমাদের ধ্রুবতারা। রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন থেকে তাঁকে প্রণাম জানিয়ে, আমরা ভাষা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছি। যতদিন এই বাংলা-বিদ্বেষ চলবে ? আমরা লড়াই চালিয়ে যাবো। আর এই লড়াইয়ের পথে রবীন্দ্রনাথই আমাদের পথনির্দেশক। আজ আমাদের নতুন করে শপথ নেবার দিন ? ‘বাংলার ওপর ভাষা সন্ত্রাস মানবো না’।”
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি ‘হেনস্তা’ ও বাংলা ভাষার অপমানের প্রতিবাদে নতুন করে ‘ভাষা আন্দোলন’ শুরু করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ২৭ জুলাই থেকে বাংলার ব্লকে ব্লকে এই মিছিল, ধরনা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বোলপুর অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের মাটিতে নিজে হেঁটে সেই আন্দোলনের সূচনা করেছেন তিনি। তারই মাঝে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি’ ভাষা বলে বিতর্কের মুখে দিল্লি পুলিশ। যা নিয়ে এত বিতর্ক, এক্স হ্যান্ডেলে দিল্লি পুলিশের সেই বিতর্কিত চিঠিটি পোস্ট করেছে রাজ্যের শাসকদল। তাতে উল্লেখ, বাংলা অনুবাদক দরকার দিল্লি পুলিশের। কারণ, কয়েকদিন আগে দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে ৮ জনকে আটক করে। তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর সেসব নথিগুলি বাংলা ভাষায় লেখা। সেসব নথির তথ্য যাচাইয়ের জন্য একজন অনুবাদক প্রয়োজন।
আর সেই চিঠিতেই বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি’ ভাষার তকমা দেওয়া হয়েছে। তার প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। যে ভাষা ধ্রুপদী ভাষার তকমা পেয়েছে, যে ভাষায় বিশ্ববরেণ্য সমস্ত সৃষ্টিকর্ম হয়েছে, যে ভাষা দেশের অন্যতম ‘অফিশিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ’, তাকে ‘বাংলাদেশি’ বলে তকমা দেওয়ার অর্থ সংবিধানকে অপমান। নিজের এক্স হ্যান্ডলে এমনই মত প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনাকে ‘অপমানজনক, সংবিধান-বিরোধী, দেশবিরোধী’ বলে দিল্লি পুলিশকে বিঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।