• ছাব্বিশের ভোটের আগে বাউরি বোর্ডে রদবদল, তৃণমূলের প্রভাবশালী নেতার বদলে দায়িত্বে নবাগত
    প্রতিদিন | ০৭ আগস্ট ২০২৫
  • টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বাউরি সমাজে বড়সড় সাংগঠনিক রদবদল করল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গ বাউরি কালচারাল বোর্ডের শীর্ষ নেতৃত্ব বদল করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে একসময়ের প্রভাবশালী নেতা দেবদাস বাউরিকে। তাঁর বদলে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রায় নবাগত দীপককুমার দুলেকে। এছাড়া বোর্ডের অন্যান্য পদেও এসেছে পরিবর্তন। সহ-সভাপতি হিসেবে দেবরাজ বাউরি, রমা বাউরির পাশাপাশি সাধারণ সদস্য হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে আরও ১৪ জনকে। তাঁরা হলেন, স্বরূপ বাউরি, মনোরঞ্জন বাউরি, পঞ্চানন বাউরি, বাসুদেব বাউরি, রতন বাউরি, চিত্ত বাউরি, প্রশান্ত বাউরি, প্রমিলা বাউরি, রীতা বাউরি, সুভাষ বাউরি, রঞ্জিত বাউরি, নির্মলকুমার বাউরি, রবীন্দ্রনাথ বাউরি ও শচীন বাউরিকে।

    সদ্য প্রাক্তন হওয়া দেবদাস বাউরি একসময় বাঁকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর ছিলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থাকলেও সম্প্রতি তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ ওঠে। তৃণমূলের একাংশের দাবি, তিনি কর্মীদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেছিলেন, অভিযোগ ছিল স্বজনপোষণেরও। সেই কারণে তাঁকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়েছে। বোর্ডের অপর ভাইস চেয়ারম্যান পদে আনা হয়েছে রাম বাউরিকে।

    বাউরি কালচারাল বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়া দীপক দুলে রাজনীতিতে একেবারে নবাগত। তাঁর পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি এবং বাউরি সমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগই তাঁকে এই পদে বসানোর কারণ বলে দলীয় সূত্রে খবর। তবে তাঁর সামনে চ্যালেঞ্জ অনেক। শুধু নেতৃত্ব নয়, ক্ষুব্ধ সমাজের আস্থা ফেরানোর দায়ও এখন দীপক দুলের কাঁধেই। বোর্ডের অন্যান্য পদেও এসেছে পরিবর্তন। সহ-সভাপতি হিসেবে আছেন দেবরাজ বাউরি ও রমা বাউরি। প্রশাসনিক দিক থেকে বোর্ডে থাকবেন সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসক, জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিক, CRI-এর প্রতিনিধি এবং সদস্য-সচিব হিসেবে থাকছেন বাঁকুড়ার ডেপুটি কালেক্টর।

    বিরোধীরা অবশ্য এই রদবদলকে ভোটের আগে ‘দলবদলের নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছে। বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “মুখ বদল করে মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। কিন্তু এবার মানুষ জবাব দেবে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবলীনা হেমব্রম বলেন, “এই পদক্ষেপ উন্নয়ন নয়, ভোটের আগে বিভ্রান্তিকর রাজনীতি। বাউরি সমাজের প্রকৃত সমস্যা নিয়ে কারও মাথাব্যথা নেই।”

    রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে বাউরি সমাজ গুরুত্বপূর্ণ। সেই সমর্থন ফের নিজের দিকে টানতে চাইছে তারা। কিন্তু কেবল নেতৃত্ব বদল করেই কি সেই লক্ষ্য পূরণ হবে? সে প্রশ্ন থাকছেই। নতুন দায়িত্ব পাওয়া দীপক দুলে নতুন মুখ। তবে তিনি কতটা আস্থা অর্জন করতে পারবেন, তা স্পষ্ট হবে আগামী বছর ভোটের ফলাফলেই।
  • Link to this news (প্রতিদিন)