• বিমল গুরুং ঘনিষ্ঠই দার্জিলিং পাহাড়ে BJP-র সভাপতি, নেপথ্যে কোন অঙ্ক?
    আজ তক | ০৭ আগস্ট ২০২৫
  • BJP New President Darjeeling: পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য় বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে গত সপ্তাহেই দেখা করেছিলেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুং। তার কয়েকদিনের মধ্যেই  বিমল ঘনিষ্ঠ নেতাকে দার্জিলিং হিল সভাপতি করে দেওয়া হল। যার পরই জল্পনা শুরু হয়েছে, লোকসভার মতো বিধানসভাতেও বিমলের সমর্থন থাকবে বিজেপির সঙ্গে। যা বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনেকটা অক্সিজেন যোগাবে বিজেপিকে।

    এর আগে পাহাড়ের পুরনো নেতা কল্যাণ দেওয়ান সভাপতি করা হয়েছিল। তবে তাঁকে দিয়ে কাজ হচ্ছিল না বলে বিজেপি সূত্রে খবর। গতবার লোকসভা জিতলেও তারপর বিধানসভা, জিটিএ, দার্জিলিং-মিরিক পুরসভা ভোটে দাগ কাটতে পারেনি বিজেপি। নতুন দল গড়ে প্রভাব বিস্তার করে অজয় এডওয়ার্ডের মতো নেতাও গদি দখল করে। কিন্তু পিছিয়ে থাকে বিজেপি। সেই ছবি বদলাতে চাইছে গেরুয়া শিবির। 

    নতুন সভাপতি করা হয়েছে এক সময় বিমলের ছায়াসঙ্গী যুব নেতা সঞ্জীব তামাংকে। বুধবার বিকেলেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি এই নিয়োগ সংক্রান্ত ঘোষণা করেছেন। এরপর থেকেই পাহাড়ের রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, তবে কি এবার বিধানসভা নির্বাচনে সরাসরি বিজেপির হয়ে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে প্রচার করবেন বিমল?

    বিজেপির মাটিগাড়া নকশালবাড়ি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন অবশ্য কোন রাখঢাক না রেখেই জানিয়ে দিয়েছেন রাজনীতিতে সবই সম্ভব। লোকসভায় যেমন গুরুং কংগ্রেসের সঙ্গে দরকষাকষি করে শেষ মুহূর্তে বিজেপিকে সমর্থন দিয়েছিলেন, বিধানসভাতেও তাঁকে পাশে পাওয়া যেতেই পারে। তিনি বলেন, "পাহাড়ের সংগঠন আমাদের তেমন শক্তিশালী ছিল না। ফলে যুব নেতা সঞ্জীব তামাংকে পাহাড়ের সভাপতি করায় একটা বড় অংশ উদ্বুদ্ধ হবে আর সেইসঙ্গে বিধানসভার আগে সংগঠন আরও গতি পাবে বলে আমরা আশাবাদী।"

    পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পর রাজ্য সরকার বিমলের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী আইনে মামলা করেছিল। ওই সময় দীর্ঘদিন পালিয়ে ছিলেন বিমল। সেই সময় বিমলের সঙ্গে সবসময় থাকতেন সঞ্জীব। বিমল যেখানে যেখানে যেতেন সেখানেই তাঁকে দেখা যেত। বিমলের সঙ্গেই তিনি আবার পাহাড়ে ফিরে আসেন। জিটিএ নির্বাচনে বিমলপন্থী হয়েই লড়াই করেন। কিন্তু ওই নির্বাচনে বিমলপন্থীরা কোনও দাগ কাটতে না পারায় সঞ্জীব সরাসরি বিজেপিতে যোগ দেন। সেই থেকে তিনি পাহাড়ে বিজেপি যুব মোর্চার সঙ্গেই ছিলেন। পাহাড়ে যুব মোর্চার একজন সক্রিয় কর্মী হিসেবেই পরিচিত সঞ্জীব।

    ১০ বছর আগে যতটা প্রাসঙ্গিক ছিলেন, এখন আর ততটা নন। পাহাড়ে এখন আর শেষ কথা বলেন না তিনি। পাহাড়ে মানুষের হাতে তৈরি হয়েছে অনেক বিকল্প। ক্ষমতাতেও নেই বিমল গুরুং। তাঁকে সরিয়ে পুরসভা থেকে পঞ্চায়েত, বিধানসভা সমস্ত অন্য নতুন গজিয়ে ওঠা দল দখল করে নিয়েছে। তবু তিনি বিমল গুরুং। তাঁর রাজনৈতিক ক্ষমতা যে এখনও শেষ হয়ে যায়নি তাঁর প্রমাণ তাঁর আনুগত্য পেতে গত লোকসভা নির্বাচনের আগে মরিয়া হয়ে ওঠে কংগ্রেস-বিজেপি দুই বড় দলই। শেষমেষ দার্জিলিংয়ের বিজেপি প্রার্থী ও সাংসদ রাজু বিস্তা তাঁর সঙ্গে সমঝোতা করে ফেলেন। যার ফলও মেলে তাঁদের পক্ষে। বিজেপির প্রার্থী হিসেবে লাগাতার দ্বিতীয়বার সাংসদ হন রাজুবাবু। এবার বিমল ঘনিষ্ঠ সঞ্জীবকে সভাপতি করার পিছনে বিমলের পরামর্শ ও তাঁকে খুশি করার বিষয় রয়েছে বলেই জানান তিনি।

     
  • Link to this news (আজ তক)