বিহারের ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা বা SIR নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে দেশ। বিহারের পরে বাংলাকে টার্গেট করা হবে, এমনটা গোড়া থেকে বলে এসেছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই বিহারে খসড়া ভোটার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে ৬৫ লক্ষ নাম। আর ঠিক এই আবহেই ঝাড়গ্রামের সভা থেকে বাংলার মানুষকে সতর্ক করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর সতর্কবার্তা, ‘না জেনে ফর্ম ফিল-আপ করবেন না। ভোটার লিস্ট থেকে নাম বাদ দিয়ে দেবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সব দেবেন, নিজের ঠিকানা দেবেন না।’ কেউ কোনও কিছু দেওয়ার কথা বলে ফর্ম ফিল-আপ করতে বললেও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিশেষ নিবিড় সমীক্ষায় ভোটার তালিকা যাচাই করার জন্য একাধিক নিয়ম আনা হয়েছে। সেই কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সতর্কবার্তা, ‘যাঁরা ভাবছেন এপিক কার্ড আছে...আর কিছু লাগবে না। নিয়মটা পাল্টে গিয়েছে। আগের লিস্টে নাম থাকলে হবে না, নতুন করে নাম তুলতে হবে।’
যাঁরা নতুন ভোটার হচ্ছেন, তাঁদের জন্য বাবা-মায়ের বার্থ সার্টিফিকেটও লাগবে এ বার থেকে। এই বিষয়টি নিয়েও তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এত লোক কী ভাবে তাঁদের বাবা-মায়ের বার্থ সার্টিফিকেট জোগাড় করবে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কেন্দ্র কেন এই কাজ করছে সেটাও জানিয়েছেন। মমতার অভিযোগ, মানুষের নাম বাদ দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত।
সম্প্রতি বাংলার ভোটার তালিকায় কারচুপি করার অভিযোগে চার জন রাজ্য সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই বিষয়টি নিয়ে বুধবারই তোপ দেগেছেন মমতা। বৃহস্পতিবারও তিনি বলেন, ‘২ জন WBCS অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, কোন আইনের অধীনে সাসপেন্ড করা হলো?’ তাঁর দাবি, এনআরসি-র নাম করে অফিসারদের ভয় দেখানো হচ্ছে। এই আবহে সরকারি অফিসারদের প্রতি বার্তাও দিয়েছেন তিনি। মমতা স্পষ্ট বলেছেন, ‘অফিসারদের পাশে সরকার ছিল-আছে-থাকবে...যে কোনও সরকারি কর্মীদের পাশে সরকার রয়েছে।’
সম্প্রতি বাংলার বাইরে একাধিক পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর অত্যাচারের ঘটনা সামনে এসেছে। বাংলা বলার জন্য ভিনরাজ্যে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠছে বার বার। ঝাড়গ্রামের সভা থেকে সেই ঘটনাও মনে করিয়ে দিয়ে, প্রতিবাদে সরব হওয়ার ডাক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এক্স হ্যান্ডলে একটি বার্তায় লিখেছিলেন, ‘বাংলা নামে কোনও ভাষা নেই।’ তা নিয়ে গোড়া থেকে রাস্তায় নেমেছে তৃণমূল। ঝাড়গ্রামের সভায় ১৯১২ সালের দশ টাকার নোটের ছবিও দেখান মমতা। সেখানে বাংলায় লেখা রয়েছে দশ টাকা কথাটি। তা দেখিয়ে নাম না করে ওই বিষয়টি নিয়ে এ দিনও তুলোধনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।