দলবল সমেত একটি পেট্রল পাম্পে চড়াও হয়ে সেটির মালকিনকে চড় মারার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ফুলবাগান থানা এলাকায়। অভিযুক্ত মহিলার আবার পাল্টা দাবি, পাম্পের মালকিন তাঁকে কটূক্তি করেছিলেন। দু’পক্ষই ফুলবাগান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। এই ঘটনায় তৃণমূল নেতৃত্ব স্পষ্টই জানিয়েছেন, ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে আগেও এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। তাই দল বিষয়টিকে একেবারেই ভাল চোখে দেখছে না।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুর ১টা নাগাদ ঘটনার সূত্রপাত। তৃণমূলের উত্তর কলকাতা শ্রমিক সংগঠনের নেত্রী কবিতা গুপ্ত ফুলবাগানের ওই পেট্রল পাম্পের প্রাক্তন কয়েক জন কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে পাম্পে চড়াও হন। এর পরে কথা বলার নাম করে আচমকাই মালকিন সুমনা দাস রায়ের উপরে চড়াও হন বলে অভিযোগ। সুমনাকে পাম্পের ভিতরেই বেধড়ক মারধর করা হয়, যার সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশকে দিয়েছেন তিনি। পাম্পের কর্মীরা বাধা দিতে গেলে কবিতা এবং তাঁর শাগরেদরা তাঁদের উপরেও চড়াও হন বলে অভিযোগ। মারধর করে তাঁদের পাম্পের বাইরে বার করে দেওয়া হয়।
বুধবার সুমনা জানান, কবিতা যাঁদের সঙ্গে নিয়ে ওই পেট্রল পাম্পে এসেছিলেন, তাঁরা আগে ওই পাম্পেই কাজ করতেন। কিন্তু গত জুন মাসে একাধিক দাবিতে তাঁরা আন্দোলন শুরু করেন। পরবর্তী কালে ১৪ জন চাকরি ছেড়ে দেন। সুমনা জানান, বেতন বৃদ্ধি-সহ একাধিক দাবি তুলেছিলেন ওই কর্মীরা। কিছু দাবি মানাও হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও তাঁরা আন্দোলন থেকে সরে আসেননি।
এর পরে ওই ১৪ জনের জায়গায় নতুন কর্মীদের নিয়োগ করা হয়। সেই কর্মীরাই পাম্প চালাচ্ছেন। সুমনার কথায়, ‘‘পুরনো ওই কর্মীদের আবার কাজে বহাল করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। ঘটনার দিন ওই দাবিতেই আমার উপরে হামলা চালানো হয়। তার পর থেকে আতঙ্কে রয়েছি।’’
পাম্পের মালকিনকে চড় মারার অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত কবিতা। তিনি বলেন, ‘‘বিনা কারণে ওই কর্মীদের কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমি প্রতিবাদ জানিয়ে এর আগেও একাধিক বার কথা বলেছি। ওই কর্মীদের ফের কাজে বহাল করার আবেদন জানাই। সে দিনও সেই কথাই বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও কথা না শুনেই তিনি গালিগালাজ করতে থাকেন।’’ যদিও গালিগালাজের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সুমনা। দু’পক্ষই ফুলবাগান থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘কবিতা গুপ্তের বিরুদ্ধে আগেও এই ধরনের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্যি হলে দল যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। আমি বর্তমানে দিল্লিতে আছি। কবিতার বিষয়ে দলের উত্তর কলকাতা নেতৃত্বকে জানিয়েছি। তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।’’