‘শেষ বলে কিছু নেই, লড়ে যেতে হবে’, ৯ বছর পর মস্ত দায়িত্ব অনীকের কাঁধে! কোন ভূমিকায় ফিরছেন গায়ক
আনন্দবাজার | ০৬ আগস্ট ২০২৫
তাঁর উত্থান রিয়্যালিটি শো-এর হাত ধরে। তখনও ‘ভাইরাল’ শব্দটির আগমন হয়নি। হাতে হাতে যে সব ফোন ঘুরত, তারা ছিল না ততটা ‘স্মার্ট’। সে সময়েই একটি গানের মঞ্চে তাঁর সঙ্গে সলমন খানের একটি ভিডিয়ো ঘিরে তুমুল উন্মাদনা তৈরি হয়। তিনি অনীক ধর। একাধিক রিয়্যালিটি শো-এর বিজয়ী। রাতারাতি প্রিয় ওঠেন দর্শকের।
প্রায় ১৮ বছরের লম্বা সফর। তাঁর মধ্যে চড়াই উতরাই সবই দেখেছেন। তবু থেমে থাকতে নারাজ অনীক। প্রায় ৯ বছর বিরতি নিয়ে ফের ছোটপর্দায় আসছেন তিনি। এ বার সঞ্চালকের ভূমিকায়। ‘জ়ি বাংলা সিনেমা’ চ্যানেলের গানের রিয়্যালিটি অনুষ্ঠান ‘সোনার জলসাঘর’ উপস্থাপনার দায়িত্ব তাঁর কাঁধে। ওই অনুষ্ঠানে গান গাইবে খুদেরা, আবার বাজাবেও খুদেরা। অনুষ্ঠানে ‘মহাগুরু’র আসনে রয়েছেন পণ্ডিত তন্ময় বোস। এ ছাড়াও রয়েছেন পাঁচ বিচারক, পাঁচ কন্যে— জুন বন্দ্যোপাধ্যায়, পৌষালি বন্দ্যোপাধ্যায়, অদিতি মুন্সি, মেখলা দাশগুপ্ত এবং চন্দ্রিকা ভট্টাচার্য। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে শুটিং। সাজঘরে বসেই আনন্দবাজার ডট কমের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন অনীক।
জ়ি-এর সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক অনীকের, সেই ২০০৭ সাল থেকে। একের পর এক অনুষ্ঠানে জয় পেয়েছেন। যদিও এ বারের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান অন্যগুলির তুলনায় আলাদা, দৃপ্ত কণ্ঠে জানালেন অনীক। প্রথম দিনের শুটিং, চারপাশে তুমুল ব্যস্ততা। তারই মধ্যে গায়ক বলেন, ‘‘অন্য অনুষ্ঠানে শুধু গায়ক-গায়িকারা নাম করেন, প্রচারের আলো বেশি থাকে তাঁদের উপরেই। কিন্তু এই অনুষ্ঠানে বাদ্যযন্ত্রীরাও সমান গুরুত্ব পাবে। এতগুলি শিশুশিল্পী নিয়ে নতুন ধরনের অনুষ্ঠান করছি, আমি আত্মবিশ্বাসী।’’
যদিও এই মুহূর্তে নাকি ছোটপর্দার দর্শকের ঝোঁক কমছে রিয়্যালিটি শো-এর প্রতি। টিআরপি রিপোর্ট অন্তত সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে। কিন্তু অনীক বলেন, ‘‘মানুষকে বিনোদন দেওয়াটা ধর্মের মতো পালন করে এসেছি। শুধু গান নয়, শিল্পীর কথাবার্তা, স্বভাব, চরিত্র, সব মানুষ দেখেন। তার উপরই নির্ভর করে অনুষ্ঠানের গতি। আমি আশা করছি কাজটা পারব করতে। ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে খুব একটা ভাবছি না। আর টিআরপি-র চাপে পড়তে চাই না। ওটা তো স্কুলের ‘রিপোর্ট কার্ড’-এর মতো। পরীক্ষাটা আগে দিই। এখন একটাই চিন্তা, অনুষ্ঠানটা যেন জমাতে পারি।’’
নিজের এত বছরের অভিজ্ঞতা, জনপ্রিয়তাও রয়েছে। তবু অনীক কি কাজের দৌড়ে খানিক পিছিয়ে পড়েছেন? সুগায়ক বলে নামডাক থাকলেও, প্লে-ব্যাকের ঝুলিতে গানের সংখ্যা বেশ কম।
নিজেকেই এর জন্য দায়ী করেন অনীক। তিনি কাজ চাইতে পারেন না, সে অর্থে মুখচোরা। যদিও ‘চেঙ্গিস’, মির্জা’-র মতো ছবিতে সুরকারের কাজ করেছেন। তবু, লড়াই করে যেতে প্রস্তুত অনীক। গায়ক বলেন, ‘‘সব কিছু পরিকল্পনামাফিক হয় না। কিন্তু, লড়াইটা চালিয়ে যেতে হয়। আমি কারও সঙ্গে সে ভাবে মিশিনি। কেউ আমার নাম সে ভাবে প্রস্তাব করেননি, নিজে থেকেও কাউকে অনুরোধ করিনি। আমি তো ঈশ্বরের কাছেও চাইতে পারি না।”
অনীক মনে করেন, হয়তো কোনও দিন হঠাৎ কোনও গান চলে আসবে তাঁর কাছে। আর মানুষের মনে জায়গা করে নেবে। এখানেই সব কিছু শেষ নয়, বিশ্বাস তাঁর। গায়কের কথায়, “সব পরিস্থিতিতেই নতুন একটা শুরু করা যায়। যেখানে বড় তারকারাও প্রতিনিয়ত অগ্নিপরীক্ষা দিচ্ছেন, সেখানে আমি তো প্রায় কিছুই নই।’’