ফের রাজ্যে রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া। বদ্ধ ঘরে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে মায়ের পচাগলা দেহ আগলে বসে ছিলেন ছেলে। অবশেষে বুধবার সেই দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। মুর্শিদাবাদের সমশেরগঞ্জের ঘটনা। মৃতার নাম বাসন্তী সাহা(৬২।
নিমতিতা এলাকার বাসিন্দা সুদম সাহা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকারই একটি বাড়িতে মা ও ছেলে মিলে থাকতেন। বাড়ি থেকে খুব একটা বের হতেন না। প্রতিবেশীদের সঙ্গেও মেলামেশা করতেন না। প্রায় এক সপ্তাহ আগে তাঁদেরকে দেখেছিলেন এলাকাবাসীরা। তার পর থেকে বাড়ির দরজা বন্ধই ছিল। বেশ কিছু দিন এলাকায় পচা গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। তা থেকেই সন্দেহ হয়েছিল স্থানীয়দের। এলাকাবাসীরা যোগাযোগ করেন স্থানীয় থানায়। পুলিশ এসে দেখতে পায় মায়ের পচাগলা দেহ আগলে রেখেছে ছেলে। তার পরে দেহ উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি মৃতার ছেলেকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশের অনুমান, আনুমানিক সাত দিন ধরে মৃতার দেহ আগলে ছিল ছেলে।
স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী সুদম। মেধাবী হিসাবে এলাকায় যথেষ্ট নাম ডাক ছিল তাঁর। তবে বছরখানেক ধরে মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছিল তাঁর। আরও জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বাসন্তী দেবীও। তবে কী ভাবে প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। থানা সূত্রে খবর, দেহ উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
২০১৫ সালে রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডে তোলপাড় পড়ে গিয়েছিল। এক বৃদ্ধের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধারের সময় পুলিশ জানতে পারে ওই ঘরেই দীর্ঘ মাস ধরে রাখা আছে এক মহিলার কঙ্কাল। তাকে খাইয়ে দিত পার্থ দে। কঙ্কালটি ছিল তাঁর দিদির। অগ্নিদগ্ধ যে দেহ উদ্ধার হয়েছিল তা ছিল তাঁর বাবার। ২০১৭ সালে আত্মহত্যা করেছিলেন পার্থও। ২০১৫ সালের সেই ঘটনা নিয়ে ‘রবিনসন স্ট্রিট হরর স্টোরি: মিথ ভার্সেস রিয়েলিটি’ নামে তথ্যচিত্রের সিরিজ করেছেন পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। কলকাতার কসবা, গড়ফা, নেতাজি নগর, সল্টলেকেও বিভিন্ন বছরে দেখা গিয়েছে এই কাণ্ডের ছায়া। একই ধরণের ঘটনা ঘটেছে হাওড়া, বারাসত, মেমারি-সহ একাধিক জায়গায়। আবার গোরখপুর, বারাণসী, হায়দরাবাদেও দেখা গিয়েছিল রবিনসন স্ট্রিটের ছায়া। এবার সেই ছায়া পড়ল মুর্শিদাবাদে।