‘জল’ না ‘পানি’র ভাগ চলছে, মানুষ চায় শুদ্ধ জল, সরব বিমানেরা
আনন্দবাজার | ০৬ আগস্ট ২০২৫
মানুষের হাজার সমস্যা থেকে নজর ঘুরিয়ে ভোটের আগে ধর্ম ও ভাষার নামে ভাগাভাগির খেলায় নেমেছে কেন্দ্র ও রাজ্যের দুই শাসক দল। মুজফ্ফর আহমেদের ১৩৭তম জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে এই সুরেই বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্দেশে তোপ দাগলেন সিপিএম নেতৃত্ব।
প্রতি বছরের মতো এ বারও মুজফ্ফরের (কাকাবাবু) জন্মদিনে রাজ্য জুড়ে দিনভর নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সিপিএম। কলকাতায় মহাজাতি সদনে এই উপলক্ষে সভা থেকে প্রবীণ নেতা ও বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেছেন, ‘‘আরএসএসের শতবর্ষ চলছে, তারা তাদের পরিকল্পনায় এগোচ্ছে। তাদের পাশাপাশি এ রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসও সাধারণ মানুষের লড়াই-সংগ্রাম থেকে সরে শুধু তাদের আর বিজেপির লড়াই দেখাতে চাইছে।’’ বাংলাভাষীদের উপরে সাম্প্রতিক আক্রমণের দিকে ইঙ্গিত করে বিমান মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘‘ভাষা নিয়ে বিরোধ কখনওই কাম্য নয়। কিন্তু এই রাজ্যে গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার গাড়িতে হামলার পরে মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন নড্ডা-চাড্ডা-গাড্ডা-ফাড্ডা! এটা কি অন্য রাজ্যের মানুষের প্রতি সম্মান দেখানো? গুজরাত হোক বা কাশ্মীর, কোহিমা হোক বা কচ্ছ, যে কোনও ভারতীয় এখানে সভা বা কর্মসূচি করতে এলে ‘বহিরাগত’ বলা কি সঙ্গত? এই পথে তৃণমূলও তো হেঁটেছে!’’ একই সুরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী গত নির্বাচনে ‘বহিরাগত’ শব্দ ব্যবহার করেছিলেন। ওটা আরএসএসের পাঠ্যবই থেকে নেওয়া। ভোটার তালিকায় ‘বাংলাদেশি’র প্রশ্ন আগে তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন বিজেপি ভোটাধিকার কেড়ে নিতে নামছে এই প্রশ্ন সামনে রেখেই।’’
কাকাবাবুর আদর্শ মনে রেখে এলাকায় এলাকায় গণ-আন্দোলন গড়ে তোলার ডাক দিয়েছেন বিমান। তাঁর মতে, কমিউনিস্ট পার্টিতে সদস্য হবেন কিন্তু ‘সক্রিয়’ থাকবেন না, এটা হতে পারে না! আর ভাষা-বিতর্কের প্রসঙ্গ তুলে সেলিম বলেছেন, ‘‘আরএসএস-বিজেপি ‘পানি’কে বলছে মুসলিম শব্দ। অথচ এই শব্দ সংস্কৃত থেকে এসেছে। উত্তর ভারতেও সবাই ‘পানি’ বলে। আসল সমস্যা হল, বোতলে করে জল কিনে খেতে হচ্ছে। কারণ, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরকার দেয় না। বামপন্থীরা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দক্ষিণপন্থীরা বিভাজন করে ‘পানি’ না ‘জল’, তা নিয়ে! এখানেই রাজনীতির ফারাক।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘বিজেপি এবং তৃণমূল চাইছে ধর্মের নামে অথবা ভাষার নামে ভোট হোক। আমরা তুলছি বিষয় সারের দাম, কাজ, শিক্ষার দাবি।’’