• ঔপনিবেশিক ইতিহাস পেয়েছিল নতুন দৃষ্টিভঙ্গি, প্রয়াত ঐতিহাসিক রজতকান্ত রায়
    হিন্দুস্তান টাইমস | ০৭ আগস্ট ২০২৫
  • প্রয়াত প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ রজতকান্ত রায়। দেশ স্বাধীনতার ঠিক এক বছর আগে ছেচল্লিশের দাঙ্গাবিধ্বস্ত কলকাতায় এক ইতিহাস-উত্তাল সময়ে তাঁর জন্ম। পরাধীন ভারতের সন্তানের কর্মজীবন জুড়েও বারবার উঠে এসেছে ব্রিটিশ ও মুঘলশাসিত ভারতের ইতিহাস। বুধবার বার্ধক্যজনিত কারণে ৮০ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ঐতিহাসিক।

    পলাশির যুদ্ধ থেকে ঔপনিবেশিক শাসনকালে শিল্পায়নের ধারা নিয়ে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রয়েছে তাঁর। বালিগঞ্জ রাষ্ট্রীয় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে স্কুলস্তরের পড়াশোনা। এরপর প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইতিহাসে স্নাতক হয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে স্নাতকোত্তর স্তরের অধ্যয়ন শেষ করেন। কেমব্রিজে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনিল শীলের তত্ত্বাবধানে গবেষণা করে দেশে ফিরে অধ্যাপনায় যোগ দিয়েছিলেন রজতকান্ত রায়।


    প্রথমে রজত সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন কলকাতার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্টে। এক বছর অধ্যাপনা করার পর চলে আসেন প্রেসিডেন্সি কলেজের ইতিহাস বিভাগে। রিডার হিসেবে দীর্ঘ ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন রজতকান্ত রায়। প্রেসিডেন্সি কলেজের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র দীর্ঘ সময়ের অধ্যাপক। ২০০৬ সালে উপাচার্য হিসেবে যোগ দেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ২০১১ উপাচার্যের মেয়াদ ফুরোলে ফের প্রেসিডেন্সিতে ফিরে এসে ইতিহাস বিভাগে অধ্যাপনা করেন রজত।

    ভারতের ঔপনিবেশিক ইতিহাসের পাশাপাশি বাংলার ইতিহাসও তাঁর চর্চায় ধরা দিয়েছে বারবার। একাধিক ইতিহাস গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ‘আরবান রুটস্ অব ইন্ডিয়ান ন্যাশনালিজম: প্রেসার গ্রুপস্ অ্যান্ড কনফ্লিক্ট অফ ইনটারেস্টস্ ইন ক্যালকাটা সিটি পলিটিকস’, ‘ইনডাস্ট্রিয়ালাইজেশন ইন ইন্ডিয়া:গ্রোথ অ্যান্ড কনফ্লিক্ট ইন দ্য প্রাইভেট করপোরেট সেক্টর’, ‘ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড অন্তাপ্রোনরশিপ ইন ইন্ডিয়া - ’। এছাড়াও পলাশীর যুদ্ধ নিয়ে তাঁর লেখা গ্রন্থ ‘পলাশীর ষড়যন্ত্র ও সেকালের সমাজ’ আজও পাঠকদের কাছে সমাদৃত।


    রজত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন পাঁচ বছর। এছাড়াও রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে ছিল তাঁর গভীর অনুরাগ। ২০১২ সালে রবীন্দ্রনাথের ‘জীবনদেবতা’র ধারণা নিয়ে দীর্ঘ প্রবন্ধ লেখেন ইতিহাসবিদ। সম্প্রতি দুয়েক বছর আগে এই একই বিষয়ের সূত্র ধরে এক বাংলা পাক্ষিক পত্রিকায় উপন্যাস ধারাবাহিক লিখছিলেন রজত। ‘তিমির অবগুণ্ঠনে’ শীর্ষক উপন্যাসে উঠে এসেছিল রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান নির্মাণের কাহিনি। রবীন্দ্র প্রয়াণের তারিখ ২২ শ্রাবণের ঠিক দুদিন আগে তিমির অবগুণ্ঠনেই আড়াল হলেন ঐতিহাসিক।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)