• পোস্ট অফিসের গ্রাহকদের লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারণা, পুলিশের জালে ‘কালপ্রিট’
    এই সময় | ০৭ আগস্ট ২০২৫
  • অনেক গ্রাহকের পাসবুক নিজের কাছে রেখে দিতেন। গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিলেও রসিদ দিতেন না। কারচুপি করে গ্রাহকদের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়েছিলেন ডেবরার পোস্ট অফিসের এক পিওন। অবশেষে অভিযুক্ত অমল দোলাইকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।

    অভিযুক্তকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবিতে গত দু’দিন ধরে উত্তাল হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরার সাইতল এলাকা। মঙ্গলবার রাতে ডেবরারই একটি এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতকে বুধবার মেদিনীপুর জেলা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।

    প্রসঙ্গত, পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা ব্লকের ৬ নং জলিমান্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাইতল পোস্ট অফিসের একাধিক গ্রাহকের লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব করার অভিযোগ ওঠে অমলের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা অবধি ওই পোস্ট অফিসে বিক্ষোভ দেখান গ্রাহকরা। পোস্টমাস্টার পারমিতা পাল গ্রাহকদের এই বিষয়ে আশ্বস্ত করেন এবং পুলিশের দ্বারস্থও হন। এর পরেই তদন্তে নেমে মঙ্গলবার রাতে অমল দোলাই নামে অভিযুক্ত পিওন-কে গ্রেপ্তার করে ডেবরা থানার পুলিশ। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ধৃতের ৩ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।’

    ডেবরা ব্লকের অলিদাজপুর, রামপুরা, সাইতল, চকসাহাপুর, ঘিয়াচক, অন্তলা, খামরা, সিঙ্গারপুর — এই সমস্ত গ্রামের প্রায় ১ হাজারেরও বেশি গ্রাহক সাইতল পোস্ট অফিসে আমানত রেখেছিলেন। গ্রাহকদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার নিয়মিত অফিসে আসতেন না। লেনদেনের দায়িত্বে ছিলেন অফিসের পিওন অমল দোলাই। অভিযোগ অনুযায়ী, অমল নিয়মিতভাবে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করলেও কোনওরকম রসিদ দিতেন না। অনেক সময় গ্রাহকদের পোস্ট অফিসের পাসবুকও নিজের কাছেই রেখে দিতেন তিনি। টাকা জমা দিতে গেলে বলা হতো, ‘ম্যাডাম নেই, পরে এসে বই ও রশিদ নিয়ে যাবেন।’

    দিনের পর দিন চলছিল লেনদেন। কয়েকজন গ্রাহক যখন নিজেদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে যান, তখন বারবার ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁরা মাদপুর হেড পোস্ট অফিসে গিয়ে নিজের অ্যাকাউন্টের স্টেটমেন্ট চেক করতেই চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আসে। দেখা যায়, যে টাকা তাঁরা পোস্ট অফিসে জমা দিয়েছেন, সেই পরিমাণ টাকা অ্যাকাউন্টে নেই।

    কিছু গ্রাহকের বইতে টাকা জমা দেখানো হলেও, হেড অফিসে সেই টাকা জমাই পড়েনি! অর্থাৎ পাসবুকে টাকার অঙ্ক বসিয়ে দেওয়া হলেও, ব্যাঙ্কিং সিস্টেমে সেই টাকা ঢোকেনি। ঘটনা সামনাসামনি হতেই সোমবার দুপুর থেকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রাহকরা।

  • Link to this news (এই সময়)