সাসপেন্ড-নির্দেশ মানবেন না মমতা, বললেন,'শাহের দালালি করছে কমিশন'
আজ তক | ০৭ আগস্ট ২০২৫
বীরভূমের পর ঝাড়গ্রামে ভাষা মিছিল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার, বাংলাভাষী মানুষদের উপর হেনস্থার প্রতিবাদে ঝাড়গ্রামের রাস্তায় পদযাত্রা করেন মুখ্যমন্ত্রী। পদযাত্রা শেষে মঞ্চে দাঁড়িয়ে সরাসরি বিজেপিকে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অসম সরকারকে ধিক্কার জানিয়ে বলেন, 'অসম থেকে বাংলায় কেন পাঠানো হচ্ছে NRC নোটিস ? বাংলা বললেই আটকানো হচ্ছে। কিন্তু কেন? রাজ্যে সরকারি কর্মীদের ভয় দেখানো হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ, বিদ্যাসাগর, নজরুলের ভাষাকে অপমান। বাংলা ভাষার উপর অত্যাচার সহ্য করব না।'
ঝাড়গ্রামের ভাষা আন্দোলন শেষে কমিশনের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন মমতা। বাংলার ভোটারদের নাম কাটার অভিযোগ তুলে মমতার মন্তব্য, ‘কারও নাম কাটা যাবে না।’ রাজ্যের চার আধিকারিককে সাসপেন্ড করার নির্দেশে প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘কাউকে পানিসমেন্ট পেতে দেব না না।’ এনআরসির বিরুদ্ধেও সুর চড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্তির ক্ষেত্রে অনিয়মের জেরে নিলম্বিত (সাসপেন্ড) করা হয়েছে চার আধিকারিককে। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে সে কথা জানিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নিযুক্ত এই চার আধিকারিকের বিরুদ্ধে ‘অপরাধমূলক কার্যকলাপের’ অভিযোগে এফআইআর করার নির্দেশও দিয়েছে কমিশন।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বারুইপুর পূর্ব এবং পূর্ব মেদিনীপুরের ময়না বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার তালিকার কাজ যাঁদের তত্ত্বাবধানে চলছিল, সেই দুই ইআরও (নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক) এবং দুই এইআরও-কে (সহকারী নির্বাচনী নিবন্ধন আধিকারিক) নিলম্বিত করেছে কমিশন। অবিলম্বে এই নিলম্বন এবং শৃঙ্খলাভঙ্গ সংক্রান্ত পদক্ষেপ তাঁদের বিরুদ্ধে কার্যকর হচ্ছে বলে কমিশনের চিঠিতে লেখা হয়েছে। বারুইপুর পূর্বের ইআরও এবং এইআরও হিসেবে কাজ করছিলেন দেবোত্তম দত্ত চৌধুরী এবং তথাগত মণ্ডল। ময়না বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য ওই দুই দায়িত্বে ছিলেন বিপ্লব সরকার ও সুদীপ্ত দাস। তাঁদের পাশাপাশি সুরজিৎ হালদার নামে এক ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের নামেও এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার ঝাড়গ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নির্বাচন কমিশন ‘বিজেপির ক্রীতদাস’ হিসেবে কাজ করছে। এসআইআরের পিছনে বাংলায় এনআরসি চালু করার চক্রান্ত চলছে। বাংলায় কারও নাম বাদ দেওয়া যাবে না। আরও একবার সেই হুঁশিয়ারি দেন মমতা। ভোটার তালিকায় নাম নথিভুক্তকরণে কারচুপির অভিযোগে বাংলার মোট চার আধিকারিককে সাসপেন্ড করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ওই চারজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। ওই চারজনের তালিকায় রয়েছেন দুই ইআরও (ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার) এবং দুই এইআরও (অ্যাসিস্ট্যান্ট ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার)। এদিন সেই ইস্যুতে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। কোন অধিকারে রাজ্যের আধিকারিকদের সাসপেন্ড করা হয়েছে? সেই প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নই, কোনও অফিসারকেই শাস্তি পেতে দেবেন না। এদিন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সেই কথাও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।