গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন। সময় পেরতেই শুরু হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি। স্বামীর অভিযোগ ছিল, স্ত্রী বিশ্বাসে আঘাত করেন। অন্য পুরুষের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন! আর সেই রাগ ও অভিমান থেকেই নিজ হাতে স্ত্রীর পিণ্ডদান করলেন স্বামী। জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধও করলেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের হিঙ্গলগঞ্জে।
জানা গিয়েছে, হিঙ্গলগঞ্জের উত্তর মামুদপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রাক্তন সেনাকর্মী নরেন নায়ক। ধলতিলা এলাকার বাসিন্দা সুমিতা সরকারের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাঁর। তিন বছর আগে তাঁদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দু’জনেই। যদিও সেই বিয়েতে অনেকেই আপত্তি, বাধা দিয়েছিলেন বলে খবর। কিন্তু তারপরও প্রেমের টানে তাঁদের চার হাত এক হয়।
শুরুর দিকে দু’জনের সংসার ভালোবাসায় মোড়া ছিল। কিন্তু সময় পেরতেই শুরু হয় অশান্তি। নরেন নায়কের অভিযোগ, স্ত্রী সামাজিক মাধ্যমে একাধিক পুরুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে শুরু করেন। সেই যোগাযোগ আরও নিবিড় হয়। এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে গন্ডগোল আরও বেড়েছিল। এর মধ্যেই আচমকা একদিন সুমিতা নিখোঁজ হয়ে যান! বিভিন্ন জায়গায় স্ত্রীর খোঁজ করেছিলেন নরেন নায়ক। তিনি জানতে পারেন, স্ত্রী অন্যত্র ঘর বেঁধেছেন।
এরপরই জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সেই মতো শ্রাদ্ধের আয়োজন হয়। পুরোহিত ডেকে, স্ত্রীর ছবি সামনে রেখে মন্ত্র পড়ে চলল শ্রাদ্ধানুষ্ঠান। যজ্ঞ করে জীবিত স্ত্রীর পিণ্ডও দান করেন স্বামী। শ্রাদ্ধের কাজের জন্য মাথাও মুড়িয়েছেন তিনি। কিন্তু এমন কেন করলেন তিনি? নরেন নায়ক বলেন, “আমার কাছে স্ত্রী মৃত। যিনি একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছেন এবং আমায় ছেড়ে অন্য কোথাও ঘর বেঁধেছেন, তাঁর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখতে চাই না। তাই ধর্মমতে বিদায় জানালাম।” ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এমনভাবে কি জীবিত মানুষের শ্রাদ্ধ করা সম্ভব? সেই প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা।