• ‘সুদের কারবারিদের মতো টাকা বাঁচিয়ে অন্য কাজে লাগাচ্ছে,’ রাজ্যকে বিঁধে DA বৈষম্য নিয়ে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
    এই সময় | ০৬ আগস্ট ২০২৫
  • ডিএ মামলার শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টে। বিচারপতি সঞ্জয় কারোল ও বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয় বুধবার। প্রথমে সওয়াল করেন মামলাকারীদের আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম। তাঁর সওয়ালে ফিসফাস শুরু হয় আদালত কক্ষে। সুব্রহ্মণ্যম দাবি করেন, ‘দিল্লির বঙ্গভবন ও চেন্নাইয়ের ইউথ হস্টেলে রাজ্য সরকারের কর্মীদের ডিএ দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় হারে। অথচ বাংলায় কাজ করলে রোপা রুলে ডিএ দেওয়া হচ্ছে।’ তার সমর্থনে একাধিক উদাহরণও তুলে ধরেন তিনি। এর পরেই চাঞ্চল্যকর পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। উঠে আসে সুদের কারবারিদের প্রসঙ্গ। মামলাকারীদের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিচারপতি মিশ্রের পর্যবেক্ষণ, ‘মেথড একই। এরা পুরোনো দিনের সুদের কারবারিদের মতো টাকা বাঁচিয়ে অন্য কাজে লাগাচ্ছে।’

    এ দিন সুব্রহ্মণ্যমের বক্তব্য শুনে বিচারপতি পিকে মিশ্র প্রশ্ন করেন, ‘আপনি আমাকে কি রাজ্য সরকারের এমন কোনও কর্মীর উদাহরণ দিতে পারেন, যিনি দিল্লির বঙ্গভবন বা চেন্নাইয়ের ইউথ হস্টেলে কাজ করেন এবং কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাচ্ছেন। একই কর্মী কলকাতায় কাজ করলে কম ডিএ পাচ্ছেন?’

    গোপাল সুব্রহ্মণ্যম বলেন, ‘নিশ্চয়ই। বঙ্গভবনে কাজ করলে যে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ মিলছে, সেই তথ্য দেওয়া হয়েছে সরকারি নথিতেই। অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স মেনে ২০০৮ সাল থেকে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। রাজ্য সরকার বলছে, তারা জানে না কী ভাবে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে হবে। কিন্তু তা ঠিক নয়। কারণ রাজ্য দিল্লি এবং চেন্নাইয়ে কর্মরত সরকারি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিচ্ছে। এটাকে ইনসিডেন্টাল ডিসক্রিমিনেশন বলা হবে নাকি অন্য কিছু? মনে রাখতে হবে ডিএ হলো ভ্যারিয়েবল অ্যালাউন্স।’

    এর আগেও কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ডিএ মামলার শুনানির সময়ে দিল্লির বঙ্গভবনের কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন মামলাকারীদের আইনজীবীরা।

    সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পিকে মিশ্র এর পরেই জানতে চান, বঙ্গভবনের কর্মীদের আলাদা ডিএ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার কি আলাদা আদেশনামা জারি করেছিল? আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম বলেন, ‘২০১৯ সালের রোপা রুলের পরে এই নির্দেশ জারি করা হয়েছিল, যেখানে ১ জানুয়ারি ২০২০ থেকে দিল্লির বঙ্গভবনের সরকারি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে ডিএ, এইচআরএ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এর পরে দু’বছর তাঁদের ডিএ দেওয়া হয়নি৷ তার পরে সামান্য কিছু দেওয়া হয়।’

    এ দিন আদালতে মামলাকারীদের আইনজীবী জানান, ২০১৬ সালে এই মামলা শুরু হয়েছিল। ২০১৮ সালের ৩১ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্ট প্রথম রায় দিয়েছিল৷ কেন্দ্র সরকার প্রতি বছর দু’বার করে ডিএ দেয়। আইন মেনেই করা হয় এই পদক্ষেপ। আইন বলছে, ডিএ কর্মীর ন্যায্য প্রাপ্য৷ সরকারকে তা দিতেই হবে। বেতন কমিশনের সুপারিশ সরকার মানতে পারে, নাও পারে। আর রোপা রুলেই বলা হয়েছে ‘রাজ্য সরকারের কর্মীরা সময়ে সময়ে ডিএ পাওয়ার জন্য যোগ্য, তাঁরা এনটাইটেলড৷ এটা কোনও গ্রেস নয়, বেতনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।’ কিছুক্ষণের বিরতি। ফের শুরু হবে শুনানি।

  • Link to this news (এই সময়)