কসবা কাণ্ডে মনোজিৎ-সহ চারজনের ৮ আগস্ট পর্যন্ত ফের পুলিশি হেফাজত
প্রতিদিন | ০৬ আগস্ট ২০২৫
অর্ণব আইচ: কসবায় আইন কলেজে আইনের ছাত্রীকে গণধর্ষণের মামলায় মনোজিৎ মিশ্র ও তার তিন সঙ্গীকে ফের পুলিশ হেফাজতে নিল পুলিশ। চার অভিযুক্তকেই রাতে লালবাজারে নিয়ে গিয়ে শুরু হয় জেরা। গণধর্ষণের মূল অভিযুক্ত মনোজিৎ মিশ্র, তার দুই সঙ্গী আইনের ছাত্র জায়েব আহমেদ ও প্রমিত মুখোপাধ্যায় এবং নিরাপত্তারক্ষী পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৮ আগস্ট পর্যন্ত ফের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত।
মঙ্গলবার মনোজিৎ মিশ্রর আইনজীবী রাজু গঙ্গোপাধ্যায় ও পিনাকীর আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য তাদের জামিনের আবেদন জানান। জায়েব ও প্রমিতের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন জানাননি। এদিন এই প্রথমবারের জন্য মনোজিতের জন্য জামিনের আবেদন জানান তার আইনজীবী। এর বিরোধিতা করে পুলিশের আবেদন, বৈদ্যুতিন নথি, ডিজিটাল নথির ফরেনসিক রিপোর্ট, সিসিটিভির ফুটেজ, কেন্দ্রীয় ফরেনসিক রিপোর্ট লালবাজারের গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। তারা আগে যা বয়ান দিয়েছিল, তার সঙ্গে রিপোর্টের কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। সেগুলি মেলানো ও যাচাই করার জন্য চার অভিযুক্তকেই জেরার প্রয়োজন। মনোজিৎ ও তার সঙ্গীরা প্রভাবশালী। তারা জামিন পেলে সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারে বলে অভিযোগ পুলিশের।
আদালতে মনোজিতের আইনজীবীর পালটা অভিযোগ, অভিযোগকারিণী ছাত্রীকে অভিযুক্ত জায়েব দোকান থেকে ইনহেলার কিনে দিয়েছিল। সেই টাকা জায়েব ফেরত চেয়ে মেসেজ করেছিল। সেই কারণেই ওই ছাত্রী গণধর্ষণের অভিযোগ করেন। ছাত্রী ধূমপানের কারণে অসুস্থ বোধ করে ইনহেলার চান। মনোজিতের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগকারিণী ইউনিয়ন রুমে যান। তাঁকে অপহরণ করা হল কখন? রাত দশটা পর্যন্ত ওই ছাত্রীর উপর অত্যাচার চলল, অথচ পাশেই পুলিশ কিয়স্ক, চায়ের দোকানের কেউ ও পথচারীরা টের পলেন না। কলেজের ৬০০ মিটার দূরে কসবা থানা। বাবার সঙ্গে ওই ছাত্রী কসবা থানার সামনে দিয়ে গেলেন, অথচ কোনও অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন? মনোজিতের বান্ধবী, যিনি নিজেও অভিযুক্তর আইনজীবী, তাঁকে পুলিশ লালবাজার অথবা তাঁর বাড়িতে ডেকে পাঠিয়ে জেরা করতে চায় কেন? সরকারি আইনজীবী অথবা অভিযুক্তর আইনজীবীর অফিসেও জেরা করতে পারে। এতে রাজি হয় পুলিশ। ঘটনার দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত অভিযোগকারিণী কাদের ফোন বা হোয়াটস অ্যাপ করেছিলেন, তা জানতে ওই ছাত্রীর মোবাইল পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়।
মনোজিতের আইনজীবীর দাবি, এনআরএস হাসপাতালের সামনে মনোজিতকে পুলিশের গাড়িতে ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে তার আঙুলের ছাপ নেওয়া হয়। কিন্তু তার কোনও ডিএনএ পরীক্ষা হয়নি। পরনের কাপড়ের তল্লাশির আগে তাকে পুলিশ ইঞ্জেকশন দেয়। এই ব্যাপারে আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টে পুলিশের দাবি, গ্রেপ্তারের পর ভোরে বাঘাযতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে তার মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়, যেখানে সে সুস্থ বলেই চিকিৎসকরা জানান। মনোজিতকে এনআরএসে নিয়েই যাওয়া হয়নি। ফলে তার আইনজীবীদের দাবির কোনও ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ।