পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে চিহ্নিত ৫৫০টি বেআইনি নির্মাণ আর কবে ভাঙা হবে?
বর্তমান | ০৬ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে চিহ্নিত ৫৫০টি বেআইনি নির্মাণ আর কবে ভাঙা হবে? কবে আবার সেখানে জল দেখতে পাবে কলকাতার মানুষ? আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত এই জলাভূমির একাংশ দখল করে বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত মামলায় মঙ্গলবার এমনই প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট।
নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও জলাভূমি দখল করে গড়ে ওঠা বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি কর্তৃপক্ষ ও রাজ্যের গড়িমসিতে এদিন চরম বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তিনি স্পষ্টভাবে জানতে চান, এখনও পর্যন্ত ঠিক কতগুলি নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আর ক’টি ভাঙা হয়েছে? উত্তর রাজ্যের আইনজীবীরা জানান, ‘কিছু দোকান পাওয়া গিয়েছে।’ এই উত্তর শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি। বলেন, ‘পূর্ব কলকাতা জলাভূমি কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছিল, সবক’টি বেআইনি নির্মাণ সরেজমিনে ইনসপেকশন করুন, নোটিস দিন তারপর ভাঙার ব্যবস্থা করুন। কিন্তু আপনারা একটা একচালার দোকান ভেঙে বলছেন বেআইনি নির্মাণ ভেঙেছেন? ওখানে তো শপিং মল আছে। কোটি কোটি টাকার নির্মাণ রয়েছে। সেসব বড় নির্মাণ কবে ভাঙবেন?’ এরপরেই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘এভাবে চলতে পারে না। আদালত এবার কঠোর পদক্ষেপ করতে বাধ্য হবে।’ প্রসঙ্গত, জলাভূমি কর্তৃপক্ষের টেকনিক্যাল অফিসারকে ১ আগস্ট একটি স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই রিপোর্ট দেখে এদিন চূড়ান্ত অসন্তোষ ও বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, রাজ্য ও জলাভূমি কর্তৃপক্ষের এই মনোভাব ভালোভাবে নিচ্ছে না আদালত। এর আগে আদালত বলেছিল, এসব বেআইনি নির্মাণে বিদ্যুৎ ও জলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে। সেই কাজ আপাতত অস্থায়ীভাবে করতে বলেছেন বিচারপতি সিনহা। সেই সঙ্গে তাঁর সতর্কবার্তা, কেউ যেন ভেবে না নেন যে এর ফলে বেআইনি নির্মাণের ছাড়পত্র মিলে গিয়েছে! এরপর আদালত স্থায়ীভাবেই এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেবে। ১০ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। ওই দিন জলাভূমি কর্তৃপক্ষের কাছে ফের বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে আদালত।