নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বেসরকারি ক্যুরিয়ার সংস্থার কর্মী সেজে ঢুকত আবাসন বা কমপ্লেক্সে। রেকি করে দেখে নিত কোন ফ্ল্যাট ফাঁকা রয়েছে। সেইমতো সাতসকালে ক্যুরিয়ার সংস্থার প্যাকেট নিয়ে কমপ্লেক্সে হাজির হতো সে। তারপর নিরাপত্তারক্ষীকে ম্যানেজ করে ভিতরে ঢুকে পৌঁছে যেত ফাঁকা ফ্ল্যাটে। সেখানে জিনিস সাফ করার পর বেরিয়ে যেত। এভাবেই একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে চলছিল অভিযুক্ত সন্দীপ দাস। তিলজলা এলাকায় একই কায়দায় জিনিস হাতিয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিসের জালে ধরা পড়ে গেল অভিযুক্ত।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, তিলজলা থানা এলাকার চৌভাগায় কয়েকদিন আগে একটি ফাঁকা ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে চুরি যায় সোনার গয়না ও নগদ। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, ঘটনার দিন একটি ক্যুরিয়ার সংস্থার কর্মী সেজে ওই আবাসনে ঢুকেছিল এক যুবক। তার সঙ্গে ছিল একটি কার্টন। সে আবাসনের তিনতলায় একটি ফ্ল্যাটে গিয়ে কলিং বেল বাজালে এক বাসিন্দা বেরিয়ে আসেন। ওই যুবক তাঁকে বলে, একটি কোম্পানির গিফট জিতেছেন তিনি। সেই প্রাইজ নিয়ে এসেছে সে। এরপর পিচবোর্ডের ওই বাক্সটি দিয়ে চলে যায়। নামার সময় নীচের তলার ফাঁকা ফ্ল্যাটের তিনটি তালা ভাঙে সে। ফ্ল্যাটের ভিতর ঢুকে আলমারি ভেঙে সেখানে থাকা সোনার গয়না ও নগদ হাতিয়ে পালায়। ফ্ল্যাটের মালিক ফিরে এসে এই ঘটনার কথা জানতে পারেন। আবাসনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ও নিরাপত্তা কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, সকালে একটি ক্যুরিয়ার সংস্থার লোক এসেছিল বড় বাক্স নিয়ে। যে ফ্ল্যাটে ওই বাক্স ডেলিভারি হয়েছিল, তার মালিককে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, বাক্সের ভিতরে কিছু ছিল না। তখনই আবাসনের বাসিন্দারা বুঝতে পারেন, ওই যুবক কোনও ক্যুরিয়ার সংস্থার কর্মী নয়। সে ছদ্মবেশে ভিতরে ঢুকে চুরি করেছে। থানায় অভিযোগ জানানো হলে সোমবার সিসি ক্যামেরার সূত্র ধরে তাকে তিলজলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। তাকে জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, ক্যুরিয়ার সংস্থার কর্মী সেজে বিভিন্ন আবাসনে ঢুকে সে এভাবে একাধিক চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। কোথায় কোথায় এভাবে চুরি করেছে, ধৃতকে জেরা করে তা জানার চেষ্টা চলছে।