বহিরগাছি পঞ্চায়েতের ১০ কিমি রাস্তা যেন জলাশয়, সমস্যায় ১২টি গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা
বর্তমান | ০৬ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: টানা বর্ষণে জনজীবন অতিষ্ঠ। তারপর এলাকায় এলাকায় রাস্তাগুলির দৈন্যদশা প্রাণ ওষ্ঠাগত করে তুলেছে আম জনতার। রাস্তায় খানাখন্দ দেখলে মনে হতেই পারে, এ বুঝি কোনও খোলা জলাশয়! এই রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে ১২টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের ভোগান্তি চরমে। রানাঘাট-২ ব্লকের বহিরগাছি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রেললাইনের পূর্ব পাশে প্রায় ১০ কিমি দীর্ঘ রাস্তা রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী, অন্তত গত ১৫ বছর ওই রাস্তার পূর্ণাঙ্গ সংস্কার হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন প্রতাপগড়, বিশ্বনাথপুর, শিয়ালডাঙা, পেতুয়া, মাঠপাড়া, মধ্যপাড়া, দক্ষিণপাড়া, বালাপাড়া-সহ একাধিক গ্রামের বাসিন্দা এই রাস্তা ব্যবহার করেন। কারণ স্কুল-কলেজ, বাজার, রেলস্টেশন থেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র সব কিছুতেই যাতায়াতের এটি একমাত্র রাস্তা। বেহাল রাস্তায় গর্তে জল জমে আরও ভয়াবহ অবস্থা হয়েছে। কোথাও কোথাও এক হাঁটু পর্যন্ত জল। আচমকা গভীর খানাখন্দে গাড়ির চাকা পড়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা বলছেন, পড়ুয়াদের স্কুলে পৌঁছনো, রোগী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে। আলো না থাকায় রাতে বেশকিছু জায়গায় ওই রাস্তা যেন কার্যত মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা রিক্তা সরকার বলেন, এই রাস্তা দিয়ে ছেলে-মেয়েকে স্কুলে পাঠাতে হয়। ভয় লাগে এই বুঝি টোটো উল্টে যাবে। এই রাস্তা অবশ্যই ঠিক হওয়া দরকার। কিন্তু, কোনও হেলদোলই তো নেই। আরএক নিত্যযাত্রী সমীর বিশ্বাস বলেন, প্রতিদিন অফিস যাওয়া কার্যত দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। ভোটের সময় রাজনৈতিক দলগুলি যতটা উদ্যোগ নিয়ে বাড়ির দুয়ারে হাতজোড় করে এসে দাঁড়ায়, তার ছিটেফোঁটা উদ্যোগ ভোটে জেতার পর দেখালে ওই রাস্তা এতদিনে ঠিক হয়ে যেত। আমরা কার কাছে জবাব চাইব? নেতাদের আমাদের সমস্যা নিয়ে ভাবার সময় নেই।
বেহাল এই রাস্তা নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। অভিযোগ, বহুবার জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যদিও এ বিষয়ে রানাঘাট-২ বিডিও শুভজিৎ জানা বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। লাগাতার বৃষ্টির জন্য অনেক জায়গাতেই রাস্তা সংস্কার করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি কিছুটা কমলেই রাস্তা মেরামতের কাজে হাত দেওয়া হবে। সমস্যা থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। -নিজস্ব চিত্র