• কাটোয়ার শোলার সাজ পাড়ি দিল সুইডেনে
    বর্তমান | ০৬ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: দুর্গাপুজোর আগে মঙ্গলকোটের বনকাপাশির শিল্পীদের হাতে তৈরি প্রতিমার বিখ্যাত শোলার সাজ পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে। মধ্যপ্রদেশ, কেরল, বিহারের মতো দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বরাবরই বনকাপাশির শোলার সাজ পৌঁছে যায় পুজোর আগে। এবার তার গন্তব্য সুইডেন। সে দেশের এক চিকিৎসকের বাড়ির প্রতিমা সেজে উঠবে বনকাপাশির শোলার সাজে।  

    কাটোয়া শহরের যুবক সুমিতবরণ সাহা ছ’ বছর ধরে নিজের চেষ্টায় শোলার সাজ তৈরি শিখেছেন। সেসব কাজ তিনি অনলাইনে বিক্রি করেন। সেভাবেই সুইডেন থেকে তিনি অর্ডারটি পেয়েছেন। বনকাপাশির অনেক শিল্পীর অভিযোগ, কাজের জায়গা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। শোলার বদলে প্রতিমার সাজে এখন প্লাস্টিকের ব্যবহার বেশি। তাঁদের কাছে ব্যতিক্রমী উদাহরণ কাটোয়া শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তাঁতিপাড়ার যুবক সুমিতবরণ সাহা। সুইডেনে প্রবাসী এক বাঙালি চিকিৎসকের বাড়িতে ১২ ইঞ্চি উচ্চতার কালী প্রতিমা পূজিত হন। ওই চিকিৎসক সামাজিক মাধ্যমে সুমিতের কাজ দেখে মুগ্ধ হয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সুমিত তাঁর চাহিদা অনুযায়ী মা কালীর মুকুট, আঁচল, হাতের বালা এসব তৈরি করে স্পিড পোস্টে সুইডেনে পাঠিয়ে দিয়েছেন। 

    সুমিত বলেন, আমার প্রথম কাজ নয়ডায় গিয়েছিল। তারপর একের পর এক ভিন রাজ্যে থেকে বরাত আসতে থাকে। লকডাউনে প্রথম শোলার কাজ শুরু করি। তারপর সামাজিক মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাজারের ক্রেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। আদতে ওষুধের দোকানের কর্মচারী সুমিত রাতে বাড়ি ফিরে  শোলার সাজ তৈরি করতে বসেন। ২০২২ সালে তাঁর কাজ পাড়ি দিয়েছিল মরিশাসে।

     বনকাপাশির শোলাশিল্পী মলয় মাঝি, বাবলা অধিকারী বলেন, গ্রামের অনেকেই শোলার কাজ ছেড়ে এখন অন্য পেশায় যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু ঠিকমতো কাজ করতে পারলে বিদেশেও যে এর চাহিদা রয়েছে, তা প্রমাণিত হল। আমাদের শিল্পীদের কাছে এটা একটা বার্তা যে, ইচ্ছাশক্তি থাকলে বাপ-ঠাকুরদার শেখানো শিল্পকর্মের হাত ধরেও ঘুরে দাঁড়ানো যায়। বনকাপাশি গ্রামের প্রায় ৪০০ পরিবার শোলাশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। জলাশয়ে জন্মানো শোলা কেটে আঠা দিয়ে জরি, চুমকি বসিয়ে প্রতিমার সাজ তৈরি করা হয়। গ্রামের পুরুষ, মহিলারা একসঙ্গেই এই কাজ করেন।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)