• প্রাক্তন ভোটারের তথ্য জানতে এবার পঞ্চায়েত প্রধানকে নোটিস, ‘অসম সরকারের চক্রান্ত’, তোপ তৃণমূলের
    প্রতিদিন | ০৬ আগস্ট ২০২৫
  • ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিক্রম রায়: এবার নির্বাচিত জন প্রতিনিধিকে এনআরসির নোটিস অসম ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের। কোচবিহারের মাথাভাঙা এলাকার হাজরাহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত প্রধানকে নোটিস পাঠাল অসম নলবাড়ি থেকে।

    তবে তাঁর নিজের নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। একদা কোচবিহারের বাসিন্দাকে (বর্তমানে অসমে থাকেন) শংসাপত্র দেওয়ার নথির প্রমাণ নিয়ে অসমে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রধান বিমানা বর্মনকে। ঘটনায় প্রবল শোরগোল এলাকায়।

    কোচবিহারের মেয়ে মিনতি রায়ের বিয়ে হয় অসমের নলহাটিতে। তার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দেন তিনি। কোচবিহারে বাবার বাড়ি থেকে নিয়ে যান অনেক কাগজ। তার মধ্যে একটি ছিল পঞ্চায়েতের শংসাপত্রও। পরে এনআরসি তালিকায় তার নামও আসে। কিন্তু নামের বানান ভুল। তা নিয়ে মামলা করেন মিনতি। তার জেরেই এনআরসির সময় কোচবিহারের পঞ্চায়েত থেকে নিয়ে যাওয়া শংসাপত্র দেখানোরনোটিস এসেছে নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে। কিন্তু প্রধানের কাছে সরাসরি সরকারি ভাবে সেই চিঠি আসেনি। মিনতি রায়ের ছেলে রামপদ রায় সেই নোটিস নিয়ে এসেছেন।

    পশ্চিমবঙ্গে মিনতি রায়ের বাড়ির এক সদস্য বলেন, “অঞ্চলের কাগজে ভেরিফিকেশনের জন্য চিঠি এসেছে। এটা যদি হয়ে যায় তাহলে অনেক সুবিধা হয়।” চিঠি নিয়ে আসা মিনতিদেবীর ছেলে রামপদের কথায়, “এনআরসির সময় এখানকার প্রধানের থেকে নিয়ে যাওয়া একটি নথি ভেরিফাই করার জন্য এসেছি। ২০১৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশি সন্দেহ করে আমাদের বাড়িতে নোটিস আসে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিই। কিন্তু নামের বানান ভুল থাকায় একটি কেস দায়ের করেছি। সেটির ভেরিফিকেশনের জন্য এই চিঠি।”

    অসম ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল হাজরাহাট-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানকে আগস্ট মাসের ২৭ তারিখের আগে সমস্ত নথি নিয়ে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এই বিষয়ে প্রধান বিমানা বর্মন বলেন, “আমার কাছে সরকারি ভাবে কোনও নোটিস আসেনি। হাতে পাওয়ার পর বিডিও অন্যানদের পরামর্শ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” উপপ্রধান আসিফ আলি বলেন, “আমরা হাতে কোনও নোটিস পাইনি। মিনতিদেবীর ছেলে নোটিস নিয়ে এসেছেন। এখানে ওই মহিলার সবাই আছেন। আগে সমস্ত প্রমাণ দেওয়া হয়েছে। তারপরও পঞ্চায়েতের শংসাপত্র ভেরিফিকেশন করতে প্রধানকে যেতে বলা হচ্ছে। এটা অসম সরকারের চক্রান্ত।”

    এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতর। তৃণমূলের দাবি, এই ঘটনা গণতন্ত্রের পরিপন্থী। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে এইভাবে চিঠি পাঠানো যায় না। তৃণমূলের অভিযোগ, একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিকে এইভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে কেন? বাংলা কি অসমের অধীনে? এটি একটি কাপুরুষোচিত চক্রান্ত যেখানে বাঙালিদের হয়রানি ও অপমান করা হচ্ছে এবং আমাদের সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করার নোংরা চেষ্টা চলছে। এটা সরাসরি সংবিধান এবং বাংলার সম্মানের উপর আঘাত।
  • Link to this news (প্রতিদিন)