সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেন ইলিশ উৎসব! বর্ষার মরশুমে খুদেদের পাতে পড়ল রূপালি শস্য। শুধু ইলিশ নয় বাদলার দিনে খিচুড়ির সঙ্গে ছিল বেগুনভাজা, মিষ্টি। যা চেটেপুটে খেল কচিকাঁচারা। মিড ডে মিলে মুখের স্বাদ বদলাতে এই বিশেষ উদ্যোগ নিল সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার উলুবাড়ি বেড়মাল অবৈতনিক স্কুল কর্তৃপক্ষ।
উলুবাড়ি বেড়মাল অবৈতনিক স্কুলে রয়েছে ১০০ জন ছাত্র-ছাত্রী। ৩ জন শিক্ষক নিয়ে চলে বিদ্যালয়ের পঠন-পাঠন। ছাত্র-ছাত্রীরা বেশিরভাগই আসে প্রান্তিক পরিবার থেকে। মিড ডে মিলে স্কুলে নিত্যদিন কচিকাঁচাদের পাতে পড়ে হয় খিচুড়ি না হয় সাদা ভাতের সঙ্গে সিদ্ধ ডিম। নয়তো সোয়াবিনের তরকারি। কোনও কোনও দিন সিদ্ধ ডিমের পরিবর্তে ডিমের ঝোল, নয়তো সবজির ঘ্যাঁট। খুদের বেড়ে ওঠার সময়ে প্রায় একই সবজি-ভাত মুখে রোচে না। কিন্তু উপায়ও তো নেই! সেই স্বাদ বদলাতেই এদিন একঘেয়ে খাবার-দাবারের পরিবর্তে তাদের পাতে পড়ল ইলিশ।
এক ছাত্রী অনুশ্রী বৈদ্য তো পাতে ইলিশ পেয়ে দারুন খুশি। অভিভাবক বিভা হালদার বলে বসলেন, “মনে হচ্ছে স্কুলে যেন চলছে ইলিশ উৎসব! আশপাশের স্কুলে কোথাও এমন অভিনব উদ্যোগ আমি আগে দেখিনি। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও প্রধান শিক্ষককে ধন্যবাদ।”
প্রধান শিক্ষক শশাঙ্ক হালদারের কথায়, “গভীর সমুদ্র থেকে ইলিশ ধরে মৎস্যজীবীরা রায়দিঘি ঘাটে আসেন। এখান থেকে সবটাই বাইরে রপ্তানি হয়ে যায়। একে ইলিশের অগ্নিমূল্য বাজার তার উপর সমস্ত ইলিশ রপ্তানি হয়ে যাওয়ায় এলাকার প্রান্তিক পরিবার ও ছেলেমেয়েদের ইচ্ছে থাকলেও ইলিশের স্বাদ থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত। তাই কচি কচি মুখগুলোর দিকে তাকিয়ে ঠিক করেছিলাম, একদিন হলেও অন্তত স্কুলে তাদের ইলিশ খাওয়াবোই।” তিনি আরও যোগ করেন, “খাওয়াবোই যখন ঠিক করেছিলাম, তখন বড় ইলিশই খাওয়াব বলেই ঠিক করি। বাজার থেকে প্রায় ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ কিনে এনেছি কেজি প্রতি ৮৫০-৯০০ টাকায়।” এই প্রথম শেষ নয়, আগামী দিনেও সুযোগ পেলে খুদেদের পাতে সুস্বাদু খাবার তুলে দেবেন জানিয়েছেন শশাঙ্কবাবু।