• জঙ্গিরা মরলেও ছেলে কি ফিরবে?, অপারেশন মহাদেবেও ‘স্তব্ধ’ পহেলগাঁওয়ে নিহত বিতানের বাবা-মা
    প্রতিদিন | ০৫ আগস্ট ২০২৫
  • রমেন দাস: মাস কয়েক আগেও তাঁদের মুখে ছিল হাসি। মনে ছিল আনন্দ। গত এপ্রিল মাসের ২২ তারিখের পর জীবন থেকে সব আনন্দ যেন ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। ভারতে ওই দিন অন্যতম বড় জঙ্গি হামলা হয়েছিল কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে। সেই হামলাতেই মারা যান তাঁদের সন্তান বিতান অধিকারী। সম্প্রতি পহেলগাঁও হামলায় জঙ্গিরা নিকেশ হয়েছে। তেমনি দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু ঘটনার দিন কাশ্মীরে নিরাপত্তা কোথায় ছিল? পহেলগাঁওতে পর্যাপ্ত সেনাবাহিনী কেন ছিল না? সেই প্রশ্ন তুললেন বিতান অধিকারীর বাবা বীরেশ্বর অধিকারী ও মা মায়া অধিকারী। মায়া বলে উঠেছেন, “বিতান আমাদের সন্তান। আমাদের সব চলে গেল।” ‘অপারেশন মহাদেবের’ পরেও স্বস্তি নেই তাঁদের।

    স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে পহেলগাঁওতে ঘুরতে গিয়েছিলেন বিতান। সেখানেই জঙ্গিদের গুলিতে তাঁর শরীর রক্তে রাঙা হয়। পরে কফিনবন্দি হয়ে বিতান দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে ফিরেছিলেন। গোটা এলাকা শোকে মুহ্যমান ছিল। ছেলেকে হারিয়ে হাউহাউ করে কেঁদেছিলেন বৃদ্ধ বাবা-মা। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ঘটনার পর থেকেই পরিবারের পাশে থেকেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোজঁ নিয়েছেন তাঁদের।

    কিন্তু সন্তান চলে যাওয়ার পর জীবনের সব আনন্দ যেন ফিঁকে হয়ে গিয়েছে। কেন ঘটনার দিন সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা থাকল না? সরকার কী করছিল? সেই প্রশ্ন আরও একবার তুললেন বীরেশ্বর ও মায়া। বিজেপি সরকার অপারেশন সিঁদুর করেছে। পাকিস্তানকে পহেলগাঁও হামলা নিয়ে জবাব দিয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু তখনও পহেলগাঁও হামলায় কোনও জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাই নিয়ে বিরোধীদের বিক্ষোভ, প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। অতঃপর অপারেশন মহাদেব। সেখানেই ভারতীয় সেনাবাহিনী পহেলগাঁও হামলায় তিন জঙ্গিকে নিকেষ করে। এমনই দাবি বিজেপি সরকারের। চলতি বাদল অধিবেশনে সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিজে সেই কথা জানিয়েছেন।

    কিন্তু পহেলগাঁওতে কেন ঘটনার দিন নিরাপত্তা ছিল না? জম্বু কাশ্মীরের রাজ্য সরকার কি করছিল? এই প্রশ্ন তুলেছেন বিতানের বাবা-মা। অপারেশন মহাদেব নিয়েও কি তাঁদের মনে প্রশ্ন, সংশয় আছে? স্তব্ধ হয়ে আছেন বৃদ্ধ দম্পতি। এদিনও অঝোরে কেঁদে ফেলেছেন বিতানের বৃদ্ধা মা। ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের খোঁজখবর নিয়েছেন। ২১ জুলাই শহিদ সমাবেশের মঞ্চেও বিতানের বাবা-মাকে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পা ছুয়ে প্রণাম করেন। মুখ্যমন্ত্রীর তাঁদের বলেছেন, “আমি তো আছি। মা পেয়েছি। বাবা পেয়েছি। আমরা আছি।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্তরিকতায় মুগ্ধ এই বৃদ্ধ দম্পতি।
  • Link to this news (প্রতিদিন)