• ডিএ মৌলিক অধিকার নয়, কেন্দ্রের হারে রাজ্যকে দিতে হবে, কোনও আইনও নেই, সুপ্রিম কোর্টে দাবি রাজ্যের
    এই সময় | ০৫ আগস্ট ২০২৫
  • সুপ্রিম কোর্টে চলছে ডিএ মামলার শুনানি। বিচারপতি সঞ্জয় কারোল ও বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চে চলছে এই মামলা। মঙ্গলবার শুনানির একেবারে প্রথম পর্যায়ে আদালতে প্রশ্ন উঠল, ডিএ কি মৌলিক অধিকার? নাকি আইনি অধিকার? রাজ্য জানিয়েছে, ডিএ মৌলিক অধিকার নয়। পরোক্ষ ভাবে এই দাবির সঙ্গে একমত মামলাকারীদের আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম। তবে এটা আইনি অধিকার বলে দাবি, রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের আইনজীবীর। তবে রাজ্য আইনি অধিকারও মানতে নারাজ। তাদের দাবি, এই ডিএ রাজ্যের আর্থিক অবস্থার উপরে নির্ভর করে।

    রাজ্যের তরফে এ দিন আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী কপিল সিবাল, আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান। রাজ্যের তরফে এ দিন সওয়াল করা হয়, ডিএ মৌলিক অধিকার নয়। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার দাবি জানাতে পারেন না রাজ্য সরকারের কর্মীরা। রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবাল এ দিন সওয়াল করেন, দেশে ১৩টি রাজ্য আছে, যারা নিজেদের মতো করে ডিএ দিয়ে থাকে। কেউ তাদের বাধ্য করতে পারে না কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার জন্য।

    রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের আইনজীবী গোপাল সুব্রহ্মণ্যম বলেন, ‘বহু রাজ্য কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিয়ে থাকে৷ এর ভিত্তি হলো কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স।’ এর পরেই বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘আমরা কি এই বিষয়টিকে কর্মীদের মৌলিক অধিকার হিসেবে ব্যাখ্যা করতে পারি?’

    গোপাল সুব্রহ্মণ্যম বলেন, ‘রাজ্য সরকারের কর্মীরা সরকারের নিয়ম মেনে কাজ করতে বাধ্য। এটাকে অধিকার বলা যায়।’ রাজ্যের তরফে বর্ষীয়ান আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান সওয়াল করেন, ডিএ-র অধিকারকে মৌলিক অধিকার বা ফান্ডামেন্টাল রাইট বলা যায় না। এ প্রসঙ্গে তিনি মধ্যপ্রদেশের সরকারি কর্মীদের দায়ের করা একটি মামলার প্রসঙ্গ তুলে আনেন।

    দিওয়ান উল্লেখ করেন, ২০০৮ সালের একটি রায়ে বলা হয়েছিল, ‘ডিএ হলো গ্রেস’। বিচারপতি সঞ্জয় কারোল বলেন, ‘দু’ পক্ষই এই কথা মেনে নিচ্ছে যে, এটা ফান্ডামেন্টাল রাইট নয়। এখানে কোনও রুলকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়নি।’

    এর পরেই রাজ্যের তরফে বর্ষীয়ান আইনজীবী শ্যাম দিওয়ানের সওয়াল, এখন বড় প্রশ্ন হলো, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীরা কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার দাবি করতে পারেন কি? রাজ্যের রুলে কোথাও এমন কোনও শর্ত দেওয়া নেই। কেন্দ্রীয় সরকার বছরে দু’বার ডিএ দেয় বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে।

    আইনজীবী দিওয়ান বলেন, ‘রুল ৩-১-সি রোপা ২০০৯ ধারা মেনে ডিএ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য ও কেন্দ্র কী ভাবে ডিএ দিয়েছে দেখুন। একই হারে ডিএ দেওয়া হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল দেখেছে এই বিষয়টি। ফান্ডামেন্টাল রাইটও নয়, আইনি অধিকারও নয় এটা। তার পরেও রাজ্য সরকার ডিএ দিয়েছে নিয়মিত। ডিএ দেওয়ার হার বৃদ্ধিও পেয়েছে। ডিএ দেওয়াও হয়েছে নিয়মিত ভাবে। এই অভিযোগ সত্য নয় যে রাজ্য সরকার ডিএ দেয়নি।’

    রাজ্যের বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিবাল সওয়াল করেন, ‘স্টেট পাবলিক সার্ভিস সম্পূর্ণ ভাবে রাজ্যের এক্তিয়ারে থাকা বিষয়। দেশে ১৩টি রাজ্য আছে, যারা নিজেদের মতো করে ডিএ দিয়ে থাকে। এখানে কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে কেউ বাধ্য করতে পারে না।’

    আইনজীবী দিওয়ান বলেন, ‘রোপা হলো রিভিশন ফর পে অ্যান্ড অ্যালাউন্স৷এখানে কোনও ম্যান্ডেট নেই, কোনও প্রশাসনিক নির্দেশ নেই। বিধিবদ্ধ কোনও নিয়ম নেই। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ পাবেন রাজ্যের কর্মীরা, এমন কোনও কথা বলা নেই।’ এখনও শুনানি চলছে।

  • Link to this news (এই সময়)