নিউ টাউনে এ বার তৈরি হতে চলেছে সরকারি হাসপাতাল। সবুজ শহর নিউ টাউনে মূলত উচ্চবিত্তদের বাস। কিন্তু শহরাঞ্চলের লাগোয়া প্রান্তিক এলাকাগুলির বাসিন্দারা অনেকটাই আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়ার তালিকায়। তাঁদের সিংহভাগকেই চিকিৎসার জন্য নির্ভর করতে হয় কলকাতার হাসপাতালগুলির উপরে। নিউ টাউনের মতো পরিকল্পিত উপনগরী তে সরকারি ব্যবস্থাপনায় চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করতে নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এনকেডিএ) কাছে বিভিন্ন মহল থেকেই আবেদন আসছিল।
এনকেডিএ জানাচ্ছে, হিডকো থেকে ৩২ কাঠার কিছু বেশি জমি পাওয়া গিয়েছে। সেখানেই ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০টি শয্যার পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। ওই হাসপাতাল তৈরি করবে পূর্ত দফতর। নিউ টাউনের অ্যাকশনএরিয়া-১ এর ডিএ ব্লকে তৈরি হবে হাসপাতালটি। এনকেডিএ-র আধিকারিকেরা হাসপাতাল তৈরি নিয়ে পূর্ত দফতরের সঙ্গে একাধিক বৈঠকও করেছেন।
নিউ টাউন বিধানসভা শহর ও গ্রামে বিন্যস্ত। শহর নিউ টাউনের পুর ব্যবস্থাপনাপরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে এনকেডিএ। গ্রামগুলি নিয়ন্ত্রিত হয় পঞ্চায়েতের মাধ্যমে। বর্তমানে এনকেডিএ-র অধীনে কয়েকটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে প্রাথমিকস্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়া স্থানীয় রেকজোয়ানি এলাকায় একটি হাসপাতাল রয়েছে। তবে সেখানে জটিল রোগের চিকিৎসা হয় না বলেই জানিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। ফলে নিউ টাউনেরসরকারি হাসপাতালটি কতটা সহায়ক করে তোলা যায়, তা নিয়ে স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে এনকেডিএ।
বর্তমানে নিউ টাউনে সব চেয়ে বেশি সমস্যা দুর্ঘটনাগ্রস্তরোগীদের নিয়ে। সেখানে বিশ্ব বাংলা সরণির মতো গাড়ি চলাচলের বিভিন্ন রাস্তায় আকছার দুর্ঘটনা ঘটে। পুলিশ বাধ্য হয় স্থানীয় কোনওবেসরকারি হাসপাতালে আক্রান্তকে ভর্তি করতে। নয়তো দুর্ঘটনাগ্রস্তকে নিয়ে ছুটতে হয় বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে। অনেক ক্ষেত্রে এই টানাপড়েনের মধ্যে রোগীর মৃত্যুও হয়। বছর তিনেক আগে রাস্তায় সাপে কাটায় এক পরীক্ষার্থীরমৃত্যু হয়েছিল নিউ টাউনে। কারণ সময় মতো তাঁর চিকিৎসা করানো যায়নি। অর্থাৎ, জরুরি পর্যায়ের সরকারিচিকিৎসা ব্যবস্থার অভাব রয়েছে নিউ টাউনে।
এনকেডিএ জানাচ্ছে, হাসপাতাল তৈরির প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ চালু হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা পুরোটাইপরিচালিত হবে স্বাস্থ্য ভবনের দ্বারা। এনকেডিএ পুর পরিষেবার দায়িত্বে থাকবে।
ওই হাসপাতালের বিষয়ে পূর্ত দফতর জানিয়েছে, এনকেডিএ প্রকল্পের রিপোর্ট তৈরি করে তাদের কাছে পাঠিয়েছে। এমনকি, ৫.৩৩ কোটি টাকাহাসপাতালের জন্য বরাদ্দ করেছে এনকেডিএ, এমনও দাবি পূর্ত দফতরের। সেখানকার এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, ওই বরাদ্দে কতটা কাজ করা যাবে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।