স্বামী ও এক নাবালক সন্তানকে নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এখন কোথায়, জানে না পরিবার। একই অবস্থা বীরভূমেরই আরও এক মহিলা ও তাঁর দুই নাবালক সন্তানের। তাঁদের পরিজনদের হাহাকার মিলে যাচ্ছে মালদহের এক যুবকের পরিবারের সঙ্গে। খোঁজ নেই তাঁরও। অভিযোগ, বাংলাদেশি সন্দেহে এঁদের প্রত্যেককে সে দেশে জোর করে পাঠানো হয়েছে।
বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা দানিশ শেখ, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সোনালি বিবি এবং তাঁদের বছর সাতেকের পুত্র বছর কয়েক ধরে দিল্লির রোহিণী এলাকার ২৬ সেক্টরে থাকতেন। পরিবারের দাবি, গত ১৮ জুন তাঁদের আটক করে দিল্লির কে এন কাটজু মার্গ থানার পুলিশ। তার পর থেকে তাঁরা নিখোঁজ। একই সময়ে দিল্লিতে পরিচারিকারকাজে যুক্ত মুরারইয়ের ধিতোড়া গ্রামের সুইটি বিবি ও তাঁর দুই নাবালক সন্তানকেও আটক করে পুলিশ। অভিযোগ, সকলকেই বাংলাদেশ পাঠানো হয়েছে।
সোনালির মা জ্যোৎস্না বিবি বলেন, ‘‘মেয়ে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বাড়িতে পাঁচ বছরের নাতনি রয়েছে। কাঁদছে। বাংলাদেশে যাওয়ার পরে লোকের ফোন থেকে এক বারই কথা হয়েছে।’’ রাজ্য পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘সকলে বৈধ নাগরিক। পরিবারগুলির বহু পুরনো জমির দলিলও রয়েছে। তার পরেও দিল্লি পুলিশ জোর করে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে সে দেশে পাঠিয়েছে।’’সোনালির বাবা ভদু শেখ কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছেন। মামলা হয়েছে সুইটি ও তাঁর দুই নাবালক সন্তানকে ফিরিয়ে আনতেও।
মালদহের কালিয়াচকের জালালপুরের বাসিন্দা ও পরিযায়ী শ্রমিক আমির শেখের পরিবারও দুশ্চিন্তায়। বাংলাদেশ থেকে পাঠানো তাঁর ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরে কেটেছে ১২ দিন। আমিরের বাবা জিয়েম শেখের দাবি, ‘‘প্রথমে ছেলেকে রাজস্থানের জেলে দু’মাস বন্দি রাখা হয়েছিল। পরে তাকে বাংলাদেশে পাঠানো হয়।’’
আমিরকে ঘরে ফেরাতে সোমবার দিল্লিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের দ্বারস্থ হনদক্ষিণ মালদহের কংগ্রেসের সাংসদ ইশা খান চৌধুরী। তাঁর ক্ষোভ, “আমিরের ঘরে ফেরা নিয়ে তথ্য মিলছে না।” বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ শাখার এক কর্তা বলেন, “আমিরের ব্যাপারে বাংলাদেশবর্ডার গার্ডের সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক হয়েছে। তবে বাংলাদেশ থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি।” আমিরের বাবার হাহাকার, ‘‘সবাই আশ্বাস দিচ্ছেন। কিন্তু ছেলে কবে ফিরবে, বলতে পারছেন না!’’