সরকার-রাজ্যপালের প্রতিনিধির অনুরোধও উপেক্ষা, অনড় অবস্থান উপাচার্যের, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা ২৮ আগস্টেই
বর্তমান | ০৫ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বিশেষ সিন্ডিকেট ডাকার পরও স্নাতকের তৃতীয় সেমেস্টারের পরীক্ষার দিন পরিবর্তন হল না। ২৮ আগস্ট পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্তে অনড় থাকলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তবর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে। সোমবার তিনি সরকারের প্রতিনিধি এবং রাজ্যপাল তথা আচার্য মনোনীত প্রতিনিধি মাধব মেননের অনুরোধও উপেক্ষা করেন বলে সিন্ডিকেট সূত্রে জানা গিয়েছে। এর পাশাপাশি উপাচার্য পরীক্ষা গ্রহণ নিয়ে দায় ঠেলেছেন রাজ্যের উপর। তাঁর বক্তব্য, বিরোধীরা ধর্মঘট ডাকলে যেভাবে রাজ্য সচল রাখা হয়, সেভাবেই যেন ২৮ আগস্টের পরীক্ষা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেয় সরকার। এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন বলেও তিনি জানান।
সিন্ডিকেটে উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, ‘বিষয়টি ইগোয় নিয়েছেন উপাচার্য। ছাত্রছাত্রীদের কথা ভাবছেন না। সিন্ডিকেটে রাজনৈতিক মন্তব্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নিজেদের বলে চালায়। এই আলোচনা সিন্ডিকেটে হওয়ার কথাই নয়।’ প্রসঙ্গত উপাচার্য জানিয়েছেন, কেউ পরীক্ষা দিতে না পারলে পরে তাঁর পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে সরকারি প্রতিনিধিদের প্রশ্ন, তাহলে সেই দিনই সবার পরীক্ষা কেন নেওয়ার ব্যবস্থা হবে না। অনেকের আশঙ্কা, এই যুক্তি দেখিয়ে অনেক পরীক্ষার্থীই ২৮ তারিখ অনুপস্থিত থাকতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যুক্তি ছিল, তিনমাস আগে পরীক্ষার সূচি তৈরি হয়েছে। এই দাবিও উড়িয়ে দিচ্ছেন সরকারি প্রতিনিধিরা। তাঁদের বক্তব্য, ২৩ জুলাই রুটিন ঘোষণা হয়। তাই এই যুক্তি খাটে না। চারদিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর গ্রিভান্স সেলে ছাত্রছাত্রীরাও আশঙ্কার কথা জানান। পাশাপাশি অন্তত ১০ হাজার পরীক্ষার্থী সমস্যায় পড়বেন বলে অনেকের আশঙ্কা। এরপর তিনদিন আগে উচ্চশিক্ষা দপ্তর বিশ্ববিদ্যালয়কে যানজটের আশঙ্কার কথা জানিয়ে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার কথা বলে। এই অনুরোধের সঙ্গে ছাত্র সংগঠনের অনুষ্ঠান সফল করার উদ্দেশ্য ছিল না। অথচ উপাচার্য বারবার সেই দাবিই করছেন। এদিন ডিপিআই মধুমিতা মান্না, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের প্রধান সচিবের মনোনীত প্রতিনিধি চন্দ্রানী টুডু সিন্ডিকেট বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। রাজ্যপাল মনোনীত প্রতিনিধি পরীক্ষার দিন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশও করেন এদিন। দিন পরিবর্তনের কথা ভেবে দেখতে বলেন বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত রাজ্যপালের আর এক মনোনীত প্রতিনিধি, বাবা সাহেব আম্বেদকর এডুকেশন ইউনিভার্সিটির অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য সোমা মুখোপাধ্যায় এদিন উপস্থিত ছিলেন না। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যও কিছু বলেননি।
প্রসঙ্গত, স্থায়ী উপাচার্য পদে নিয়োগের ইন্টারভিউয়ে ডাকা হয়নি শান্তা দত্তকে। স্ক্রিনিং কমিটিতে ছিল সুপ্রিম কোর্টের নিয়োগ করা শিক্ষাবিদদের সর্বভারতীয় কমিটি।