• হাইটেক ক্লাসরুম তৈরি করে পড়ুয়া টানছে দু’শতাব্দী প্রাচীন হেয়ার স্কুল
    বর্তমান | ০৫ আগস্ট ২০২৫
  • অর্পণ সেনগুপ্ত, কলকাতা: রাজ্য তথা দেশের অন্যতম প্রাচীন বিদ্যালয় রীতিমতো তাক লাগাচ্ছে পাঠদানের আধুনিকতায়। পড়ুয়াদের স্রেফ শ্রেণিকক্ষের পড়াশোনায় সীমাবদ্ধ না রেখে অডিও ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন, প্রজেক্ট ভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে হচ্ছে পড়াশোনা। মূল্যায়নও হচ্ছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে। খাতা-পেনের পরিবর্তে পড়ুয়াদের হাতে থাকছে বিশেষ ধরনের সুইচ। তা দিয়ে স্মার্ট ক্লাসরুমে শিক্ষকের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে তারা। এই ব্যবস্থার পর স্কুলে উপস্থিতির হার বাড়ছে। উৎসাহ নিয়ে নয়া পঠন পদ্ধতিতে অংশ নিচ্ছে পড়ুয়ারা।

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তপন মাইতি বলেন, ‘আমাদের স্কুলে ভালো সংখ্যক প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। পড়াশোনায় তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি বেশ চ্যালেঞ্জের। এই নয়া ব্যবস্থায় যে উন্নতি হচ্ছে তা বেশ চোখে পড়ছে।’ অডিও ভিজ্যুয়াল ক্লাসের পর্ব শেষ হওয়ার পর ছাত্রদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইন্টিগ্রেটেড ল্যাবরেটরিতে। সেখানে সিলেবাসের বিভিন্ন অধ্যায় হাতেকলমে শিখতে পারছে তারা। এরপর হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ভিত্তিক মূল্যায়ন। তাতে যে পড়ুয়া যেমন ফল করছে তার ব্যক্তিগত নথি থেকে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক এবং স্কুলের কাছে। তার ভিত্তিতে নেওয়া হচ্ছে রেমেডিয়াল ক্লাস। এরপর ফের একদফা ক্লাসরুম টিচিং পর্ব শেষ করে সামেটিভ ইভ্যালুয়েশনে বসানো হচ্ছে পড়ুয়াদের। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত প্রায় ১২০০ পড়ুয়া রয়েছে এই স্কুলে। তবে এই পদ্ধতিতে প্রাথমিকস্তরের পড়ুয়াদের পড়াশোনা সঙ্গত কারণেই হচ্ছে না।

    ডেভিড হেয়ার এবং রাজা রামমোহন রায়ের মতো শতাব্দীর চেয়ে এগিয়ে থাকা দু’জন মানুষের উদ্যোগে ১৮১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই স্কুল। এরপর কেটে গিয়েছে ২০৭ বছর। স্কুলে ভর্তির জন্য লটারি পদ্ধতি শুরু হওয়ার পর এ ধরনের প্রাচীন সরকারি স্কুলগুলির কৌলিন্য কিছুটা হলেও হারিয়েছে। বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলির রমরমাও আর একটি কারণ। দীর্ঘদিন নিয়োগ না হওয়ার ফলে শিক্ষক সংকটেও ভুগছে ঐতিহ্যশালী স্কুলগুলি। এই সমস্যার মধ্যেও আধুনিক চিন্তাভাবনাকে হাতিয়ার করে প্রতিষ্ঠান বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। 

    শিক্ষকরা বলেন, সরকারের দেওয়া পরিকাঠামো এবং সদিচ্ছাকে নির্ভর করে একেবারে অন্যভাবে এগনোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে দেখনদারি নয় প্রকৃত উদ্দেশ্য পূরণের দিকেও রাখা হচ্ছে নজর। সবমিলিয়ে ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকরা খুশি।
  • Link to this news (বর্তমান)