• রানাঘাটে জয়েন্ট বিডিওর নাম করে ব্যাঙ্কে চাকরির প্রতিশ্রুতি
    বর্তমান | ০৫ আগস্ট ২০২৫
  • দীপন ঘোষাল  রানাঘাট

    প্রতারকদের নতুন ফাঁদ। বর্তমানে ভোটার তালিকার কাজের জন্য আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও-রা। এবার সেই বিএলওদের কাছেই ফোন যাচ্ছে জয়েন্ট বিডিও-র নাম করে। আর তারপর চাকরি দেওয়ার নাম করে ফাঁদ পাতা হচ্ছে। সম্প্রতি রানাঘাটে এহেন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। 

    একদিকে, নির্বাচন কমিশনের তরফে বিএলও নিয়োগের নয়া বিজ্ঞপ্তি আর অন্যদিকে এসআইআর-এর কারণে যে রাজনৈতিক জলঘোলা হয়েছে তাতে বহুল আলোচিত এই ‘বিএলও’। সেটিকেই এবার হাতিয়ার করে প্রতারণার জাল বিছিয়েছে সাইবার প্রতারকরা? সম্প্রতি রানাঘাটে এরকম একাধিক বিএলও-র কাছে উড়ো ফোন আসে অজ্ঞাত পরিচয় প্রতারকদের। নিজেকে ব্লকের জয়েন্ট বিডিও দাবি করে প্রথমে নানারকম কথা বলা হচ্ছে। তারপরই চাকরি দেওয়ার টোপ দেওয়া হচ্ছে। সেই ফাঁদে পা দিতে সম্প্রতি রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের এক বিএলও খুইয়েছেন বেশ কয়েক হাজার টাকা। পরে অবশ্য তিনি বিষয়টি জানিয়ে সাইবার ক্রাইম বিভাগের দারস্থ হয়েছেন। 

    জানা গিয়েছে, প্রতারিত বিএলও-র নাম চম্পা বিশ্বাস। তিনি রানাঘাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের ৯০/৪০ বুথের বিএলও। তাঁর দাবি, উড়ো ফোনের অন্যপ্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি নিজেকে রানাঘাট-১ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও বলে দাবি করে। এরপর পেশাগত আনুষঙ্গিক কথার পর বিএলও-র কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে মোটা মাইনের চাকরির ‘অফার’ দেয়। সন্দেহ হলেও অপরিচিত ব্যক্তির একাধিক কথার ফাঁদে জড়িয়ে নিজের ছেলের চাকরির জন্য তিনি টাকা দিতে রাজি হন। এরপর জয়েন্ট বিডিওর পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির পাঠানো বেশকিছু ইউপিআই আইডিতে তিন দফায় প্রায় ১২ হাজার টাকার বেশি পাঠান চম্পাদেবী। তারপরই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন জয়েন্ট বিডিও পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির সঙ্গে। পরে প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে ওই মহিলা সাইবার ক্রাইম বিভাগের দ্বারস্থ হন। 

    এবিষয়ে চম্পা বিশ্বাস বলেন, প্রথমে স্কুলের হেড মাস্টার মশাইয়ের নম্বর চেয়ে ফোন করেছিল ওই ব্যক্তি। তারপর ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আমাকে চাকরির লোভ দেখায়। আমি জয়েন্ট বিডিও সাহেব মনে করে ছেলের চাকরির কথা বলতেই সে বলেন সামান্য কিছু টাকা দিলেই কাজ হবে। তিন ধাপে আমার থেকে প্রায় ১২ হাজার টাকা নেয় ওই ব্যক্তি। পরে জানতে পারি ব্লক অফিস থেকে কেউ ফোন করেনি। শুধুমাত্র তিনি নন, আরও এরকমই বুথ লেভেল অফিসারের কাছে ওই ফোন এসেছে। 

    জয়েন্ট বিডিও-র পরিচয় দিয়ে ফোনে চাকরির অফার দিয়ে প্রতারণার বিষয়টি প্রশাসনিক কর্তারাও জেনেছেন। রানাঘাট-১ ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক জয়দেব মণ্ডল বলেন, আমার অফিস থেকে জয়েন্ট বিডিও সাহেব কাউকে এই ধরনের ফোন করেননি। আমি শুনেছি একজনের কাছে এরকম ফোন এসেছিল। তিনি প্রতারিত হয়েছেন। একটি অভিযোগও হয়েছে। প্রত্যেককে অনুরোধ করছি এই ধরনের ফোন এলে সরাসরি পুলিসের দ্বারস্থ হন। আমি নিজেও পুলিসের কাছে আবেদন করেছি বিষয়টি দেখার জন্য। 

    বিষয়টি নিয়ে রানাঘাট জেলা পুলিসের অতিরিক্ত সুপার(সদর) সিদ্ধার্থ ধাপলাকে বারবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজ করা হলে তারও কোনও উত্তর দেননি।
  • Link to this news (বর্তমান)