নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরুলিয়া: কোটশিলার ঈশ্বর কুমার সামান্য এক গ্যারেজ মিস্ত্রি। টুকটাক বাইক সারানোর কাজ জানেন বছর চব্বিশের ওই যুবক। পরিবহণ দপ্তরে চাকরি পেতে এই ‘যোগ্যতাই’ যথেষ্ট বলে তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিল পরিচিত একজন। নিজেকে সে পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিক হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল। তার কথা বিশ্বাস করেছিলেন ঈশ্বর। তবে চাকরির জন্য দু’লক্ষ টাকা দাবি করেছিল সেই পরিচিত। চড়া সুদে লোন নিয়ে তার হাতে দু’লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিলেন ঈশ্বর। কিন্তু, চাকরি হয়নি। ভুল বুঝতে পেরে এখন তিনি থানার দ্বারস্থ হয়েছেন।
গত সোমবার কোটশিলা থানায় অভিযোগ করেন ঈশ্বর। তাঁর অভিযোগ, মোহনপুর গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁর দোকানে প্রায়ই আসত। সেই সূত্রেই পরিচয়। সে নিজেকে পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিক হিসেবেই পরিচয় দিত। ঈশ্বর বলেন, গত এপ্রিল মাসে সে আমাকে বলে ঝালদায় পরিবহণ দপ্তরের একটি নতুন অফিস হবে। কাজের জন্য সেখানে লোক লাগবে। দু’লক্ষ টাকা দিলে সেখানে কাজের ব্যবস্থা করে দেবে। তার কথা শুনে প্রথমে আমার খটকা লেগেছিল। আমি সামান্য একজন গ্যারেজ মিস্ত্রি। আরটিও অফিসে আমি কীভাবে চাকরি পাব? উত্তরে অবশ্য সে জানিয়েছিল, আরটিও অফিসে অনেকেই লাইসেন্স পাওয়ার জন্য বাইক নিয়ে টেস্ট ড্রাইভ দিতে আসে। সেইসব বাইকের ব্রেক, ইঞ্জিন ইত্যাদি ঠিক আছে কি না, তা দেখার জন্যই লোক নিয়োগ হবে। এ আর কী এমন হাতি ঘোড়া কাজ! তাকে বিশ্বাস করে লোন নিয়েই আমি টাকাটা দিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, টাকা দেওয়ার সময় আমার একবারও মনে হয়নি সে আমার সঙ্গে প্রতারণা করবে। সে আমার গ্যারেজেই বাইক সারাত। কোনও কাজের জন্য বিল যদি ৫০ টাকা হতো, সে ১০০ টাকা দিত। দোকানে এসে বলত, সে গরিবদের বিনা পয়সায় সেবা করে। সেই কারণেই সে আমাকে ঠকাতে পারে, এমনটা ভাবতেও পরিনি। তাই টাকাটা দিয়েছিলাম। সেসবের প্রমাণ আছে। কিন্তু, পরে যখন দেখি যে আমার চাকরিটা হচ্ছে না, তখন আমি টাকা ফেরত চাই। টাকা না মেলায় অভিযোগ জানাতে বাধ্য হয়েছি।