• পাঁশকুড়ায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় নিষ্ক্রিয় পুলিস! সিআইডি তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
    বর্তমান | ০৫ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পাঁশকুড়ায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিল হা‌ইকোর্ট। গত ২৪ জুন পাঁশকুড়া থানার গোবিন্দনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৬ বছরের এক ছাত্রী নিখোঁজ হয়। ২৫ জুন ওই নাবালিকার বাবা শ্যামসুন্দর পাটনা গ্রামের এক যুবক ও তার বাবার বিরুদ্ধে এফআইআর করেন। ওই যুবক তাঁর মেয়েকে ফুসলিয়ে নিয়ে গিয়েছে বলে নাবালিকার পরিবারের দাবি। কিন্তু ঘটনার পর ৪০ দিন কেটে গেলেও পাঁশকুড়া পুলিস তদন্ত শুরু করেনি বলে অভিযোগ। গোটা ঘটনায় হতাশ নাবালিকার পরিবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। ১ আগস্ট হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ ওই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার সিআইডি মিসিং পার্সন ইন চার্জ ওই ঘটনার তদন্তভার পাঁশকুড়া থানার পুলিসের কাছ থেকে নিয়েছে। আগামী ২২ আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি। সেদিন নাবালিকা উদ্ধার বিষয়ে সিআইডিকে আদালতে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।

    জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত যুবক বিয়েবাড়িতে ফটো তোলেন। সম্প্রতি ওই নাবালিকার এক আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে দু’জনের আলাপ হয় ও যোগাযোগ শুরু হয় বলে নাবালিকার পরিবারের অনুমান। গত ২৪ জুন রাত সওয়া ১১টা নাগাদ ওই ছাত্রী শৌচাগারে যাওয়ার নাম করে বাইরে বেরিয়ে যায়। তারপর আর বাড়ি ফেরেনি। বাড়ির লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। রাত ১২টা নাগাদ ওই নাবালিকা বাড়িতে ফোন করে পাঁশকুড়ার শ্যামসুন্দর পাটনা গ্রামের এক যুবকের বাড়িতে চলে যাওয়ার কথা জানায়। ওই যুবক তাকে বাড়ি থেকে এনেছে বলেও জানায়। 

    ঘটনার পরদিন নাবালিকার বাবা-মা শ্যামসুন্দর পাটনা গ্রামে ওই যুবকের বাড়িতে পৌঁছান। কিন্তু সেদিন সেখানে ওই যুবক কিংবা নাবালিকা কাউকে তাঁরা পাননি। যুবকের বাবাও গোটা ঘটনার কথা অস্বীকার করেন। বাধ্য হয়ে নাবালিকার পরিবার পাঁশকুড়া থানায় এফআইআর করে। এরপর গত ৪০ দিনে প্রায় ৩০ বার থানায় গিয়েও পুলিসের সহযোগিতা পাননি বলে নাবালিকার মায়ের দাবি। উল্টে পুলিস উঁচু গলায় নানা মন্তব্য করেছে বলেও নাবালিকা পরিবারের অভিযোগ। বাধ্য হয়ে ওই পরিবার হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। নাবালিকার মা বলেন, আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে এবছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। মেয়ের পড়াশোনার জন্য আমরা সবরকম চেষ্টা করেছি। কিন্তু, এরকম একটি ঘটনায় আমরা সকলেই হতবাক। নাবালিকা মেয়েকে উদ্ধারের জন্য পাঁশকুড়া থানায় অভিযুক্ত যুবকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছি। পুলিস আমার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য কোনও চেষ্টা করেনি। বাধ্য হয়ে আমরা আদালতে যাই। 

    পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন থানায় নাবালিকা পালানোর অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই পুলিস ঠিকমতো পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ। যেমন, নন্দকুমার থানার ভবানীপুর গ্রামের ক্লাস নাইনের এক ছাত্রী ২৫ এপ্রিল বাড়ি থেকে চলে যায়। এখনও পুলিস তাকে উদ্ধার করতে পারেনি। এরআগে মহিষাদল থানা এলাকায় এক নাবালিকা পালানোর পর বাড়ির লোকজন পুলিসের কাছে সহযোগিতা না পেয়ে পোস্টার সেঁটে থানায় বিক্ষোভ দেখায়। পুলিস সুপারের হস্তক্ষেপে জেলার স্পেশাল টিম তাকে উদ্ধার করে। পুলিস সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, নাবালিকা মিসিংয়ের ঘটনা আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখি। পাঁশকুড়ার ঘটনাটি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি।
  • Link to this news (বর্তমান)