উন্নয়নই লক্ষ্য, আর্থিক বিকাশের ছবি গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে
বর্তমান | ০৫ আগস্ট ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ব্লকের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে সুবর্ণরেখা। নদী-তীরবর্তী এলাকার মাটি পলিসমৃদ্ধ। বনভূমিও রয়েছে। তা সত্ত্বেও গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে কংগ্রেস ও বাম আমলে সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই ব্লকে উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ শুরু হয়। এখন ব্লকের বিভিন্ন প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি বাড়ি আলো জ্বলছে। কৃষকদের ফলানো ফসল কংক্রিটের রাস্তা দিয়ে ভিনরাজ্যে যাচ্ছে। গ্রামের মহিলারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জমানো টাকা কাজে লাগিয়ে হস্তশিল্পের সামগ্রী তৈরি করছেন।
গোপীবল্লভপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হেমন্ত ঘোষ বলেন, ব্লকের প্রতিটি এলাকায় রাস্তা ও বিদ্যুৎ-সংযোগের উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল। কৃষির উন্নয়ন এলাকার আর্থিক বিকাশ ঘটাচ্ছে।
দেড়দশক আগেও এই ব্লকের ৪৪শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করত। নদী লাগোয়া এলাকা বাদে ব্লকের ৬০শতাংশ জমি অনুর্বর ছিল। সেচের জলের অভাবে নামমাত্র ফলন হতো। এলাকার মানুষের বিকল্প রোজগারের পথ ছিল না। বন্যা প্রভৃতি প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে জমির ফসল নষ্ট হতো।
বাম আমলে বর্গাদার ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। তাতে গ্রামের চাষিদের আর্থিক অবস্থার খুব বেশি হেরফের হয়নি। ব্লকের মানুষ রোজগারের সন্ধানে ওড়িশা ও ঝাড়খণ্ডে চলে যেতেন। খরাপ্রবণ এলাকা হওয়ায় পানীয় জলের সঙ্কট ছিল। বর্ষা ঋতু বাদ দিলে কুয়োর জলে শাকসব্জির চাষ হতো। গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নামমাত্র চিকিৎসা পরিষেবা মিলত। অল্প বয়সেই মেয়েদের বিয়ে হয়ে যেত। ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের ৮০টি গ্ৰাম সংসদ এলাকায় বসবাসকারী বহু মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে জীবনযাপন করতেন।
রাজ্য তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেই ছবি বদলাতে শুরু করে। গ্ৰামের কাঁচা রাস্তা পাকা করা হয়। বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া শুরু হয়। তার ফলে সাবমার্সিবল বসিয়ে জল তোলা সম্ভব হয়। অনুরবর জমি চাষের আওতায় আসে। পাকা রাস্তা হওয়ায় এলাকায় উৎপাদিত ফসল ভিনরাজ্যে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে। ব্লকের কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বার্থে ১কোটি ৪৯লক্ষ টাকা ব্যয়ে শেড সহ মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয়েছে। আলমপুর পঞ্চায়েতের বাকরায় বেশ কিছু দোকানঘর তৈরি হয়েছে।
আমরদা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কালীচরণ জানা বলেন, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর ধারাবাহিকভাবে উন্নয়নের কাজ হচ্ছে। ২০২২সালের পর পথশ্রী প্রকল্পে তিনটি বড় রাস্তা হয়েছে। পঞ্চায়েতের উদ্যোগে তিন-চার লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১২টি ছোট রাস্তা হয়েছে। প্রতিটি সংসদে সাবমার্সিবল বসানো হয়েছে। ফলে পানীয় জলের সমস্যা যেমন মিটেছে, তেমনি অনুর্বর জমিতে সব্জি চাষ হচ্ছে। গ্রামের মানুষের রোজগার বেড়ে গিয়েছে।-নিজস্ব চিত্র