নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: ঘর নেই। ফলে গাছতলায় বসে মিড ডে মিল খায় খুদে পড়ুয়ারা। খেতে বসে কখনও গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা, আবার আচমকা বৃষ্টি এলে থালা নিয়ে দৌড়ে পালাতে হয় ক্লাসরুমে। বছর যায়, বছর আসে, কিন্তু এই ছবির বদল হয় না জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া কালিয়াগঞ্জ বিএফপি স্কুলের। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বহুবার জানিয়েছে তারা। জেলা শিক্ষা বিভাগের কর্তারাও জানেন। সবমহল থেকেই আশ্বাস মিলেছে। কিন্তু ডাইনিং শেড তৈরি হয়নি। ফলে খুদে পড়ুয়াদের ভোগান্তির বিরাম নেই।
স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নন্দিতা পাল দাস বলেন, শহর ও শহরতলিতে অন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যখন পড়ুয়ার অভাবে ভুগছে, সেখানে আমাদের স্কুলে ১৭১ জন ছাত্রছাত্রী। প্রতিদিন শতাধিক পড়ুয়া উপস্থিত থাকে। কিন্তু একটাই সমস্যা, তাদের মিড ডে মিল খাওয়ার জায়গা নেই। ক্লাসরুমে বসে খেলে নোংরা হয়ে যায়। সেকারণে বাধ্য হয়ে গাছতলায় বসিয়ে খাওয়াতে হয়।
এনিয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্যামলচন্দ্র রায়ের বক্তব্য, মিড ডে মিলের ঘর প্রশাসনের তরফে তৈরি করে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানতাম না। এ ব্যাপারে আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলব।
জলপাইগুড়ি সদরের বিডিও মিহির কর্মকার শীঘ্রই ওই প্রাথমিক স্কুলে মিড ডে মিল খাওয়ার শেড বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিষয়টি জানতাম না। আমার কাছে স্কুল কর্তৃপক্ষও আসেনি। এলে অনেক আগেই সমস্যার সমাধান হয়ে যেত।
ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অভিভাবকরা। জোড়া কদমবক্সি পাড়ার বাসিন্দা সান্ত্বনা রায় বলেন, আমার সন্তান প্রাক প্রাথমিকে পড়ে। স্কুলে খোলা জায়গায় বসিয়ে বাচ্চাদের খেতে দেওয়া হয়। পাখির বিষ্ঠা, ধুলোবালি খাবারে এসে পড়ে। স্থানীয় ঢিংপাড়ার বাসিন্দা তহশিনা খাতুনের গলাতেও একই উদ্বেগের সুর। তিনি বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকবার বলেছি, ক্লাসরুমে বসিয়েই খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হোক। তারপরেও খোলা জায়গায় খেতে দেওয়া হয়। - নিজস্ব চিত্র।