• শোকজের চিঠি পেয়েও ‘স্বমহিমা’তেই দিলীপ
    বর্তমান | ০৫ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি ও সংবাদদাতা, বাগডোগরা: দল শোকজ করলেও দমেননি তৃণমূল কংগ্রেসের ‘বিদ্রোহী’ নেতা দিলীপ বর্মন। সোমবার তিনি স্বমহিমায় রাজবংশী তাস ব্যবহার করে দলীয় নেতাদের আক্রমণ করেন। তাঁর এই ‘বাণ’ বিদ্যুতের গতিতে ছড়াচ্ছে শিলিগুড়িতে। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে দলের মাটিগাড়ার এক নেতাও কোর কমিটি নিয়ে তুলেছেন প্রশ্ন। ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। সমগ্র ঘটনায় স্থানীয় রাজনীতি সরগরম। 

    মেয়র ও ডেপুটি মেয়রকে আক্রমণের পর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ তুলে দিলীপকে শোকজ করে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস। রবিবার দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির স্বাক্ষর করা সেই শোকজের চিঠি তাঁর ঠিকানায় পাঠানো হয়েছে বলে খবর। এরপরও নিজের অবস্থান থেকে এক ইঞ্চিও সরেননি দিলীপ। তিনি ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার। শিলিগুড়ি পুরসভার ট্রেড লাইসেন্স, আবাস এবং ক্রীড়া বিভাগের এমআইসি। এদিন তিনি বলেন, কোনও অন্যায় করিনি। যাঁরা দলকে সামনে রেখে ধান্দা করছেন,তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছি। সরকারি জমি আমি উদ্ধার করে দেব। আর আমাকেই পাত্তা না দিয়ে ধান্দাবাজরা নিজেদের মতো করে সেই জমি ব্যবহারের ছক কষবেন, এটা হয় না। কাজেই দমে যাওয়ার কিছু নেই। 

    ইতিমধ্যে দিলীপের সমর্থনে হায়দয়পাড়ায়, মাটিগাড়ায় পথসভা, মিছিল করে রাজবংশী সম্প্রদায়। এমন প্রেক্ষাপটে দিলীপ সুর আরও চড়িয়েছেন। বলেন, রাজবংশীরা এখানকার ভূমিপুত্র। লড়াই করতে জানে। তাই বঞ্চনার প্রতিবাদে লড়াই চলবে। এজন্য দলের অনেকেই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আইনজীবী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে। 

    এদিকে,দিলীপের তোলা রাজবংশী অস্ত্র সামনে এনেছেন তৃণমূলের মাটিগাড়া-২অঞ্চল সভাপতি ব্রজকান্ত বর্মন। তিনি বলেন, দলের ন’জনের কোর কমিটিতে রাজবংশী সম্প্রদায়ের কোনও প্রতিনিধি নেই। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব। এদিন বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মেয়র। পরে তিনি বলেন, ওই কমিটি দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব গঠন করেছে। সুযোগ পেলে অবশ্যই ব্রজকান্তের বক্তব্য দলের রাজ্য কমিটিকে জানাব। তবে আমরা সবসময়ই রাজবংশী সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব ও কর্মীদের নিয়েই চলি। এই সম্প্রদায় ছাড়া আমরা অসম্পূর্ণ। 

    তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ অবশ্য জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গে দল, সংসদীয় রাজনীতি ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছে রাজবংশী সম্প্রদায়। রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি, রাজবংশী ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কালচারাল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। কাজেই দিলীপ ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা অযথা এটাকে ইস্যু করতে চাইছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)