দেশের স্বার্থে বিএলও হিসাবে কাজ করতেই হবে প্রাথমিক শিক্ষকদের: হাইকোর্ট
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৫ আগস্ট ২০২৫
বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও) হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষকদের কাজ করতেই হবে। সোমবার এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানিয়ে দেন, দেশের প্রয়োজনে প্রাথমিক শিক্ষকদের এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের করা মামলাটি খারিজ করে দেয় আদালত।
সম্প্রতি রাজ্যের একাধিক প্রাথমিক শিক্ষক হাইকোর্টে মামলা করেন বিএলও-র কাজ থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়ার দাবিতে। তাঁদের যুক্তি ছিল, সপ্তাহে সোম থেকে শনিবার পর্যন্ত স্কুলে পাঠদান ও অন্যান্য প্রশাসনিক দায়িত্বে তাঁরা নিযুক্ত থাকেন। এর মধ্যে আবার অতিরিক্ত সময়ে বিএলও-র কাজ করা সম্ভব নয়। আদালতের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত কমিশন নির্দিষ্ট করে জানায়নি বিএলও-দের কী কী দায়িত্ব থাকবে এবং কত সময় দিতে হবে। এমন পরিস্থিতিতে ধরে নেওয়ার কোনও যুক্তি নেই যে তাঁদের পূর্ণ সময় এই কাজে নিযুক্ত করা হবে।
বিচারপতি সিনহা পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘কর্মক্ষেত্রের নির্ধারিত কাজ শেষ করে অতিরিক্ত সময়ে ভোটের সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশের স্বার্থে এই কাজ করতে হবে। এটি কোনও অপমান বা বাড়তি চাপ নয়, বরং সরকারি কর্মচারী হিসাবে এটি কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।’ আদালত আরও জানায়, অতীতে কেরল হাইকোর্টের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টও একই রায় দিয়েছিল।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশেষ ভোটার তালিকা সংশোধন কর্মসূচি (এসআইআর)-র জন্য বুথ লেভেল অফিসার, সুপারভাইজার ও এজেন্টদের নিযুক্ত ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। কমিশনের নির্দেশে দেশের সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের (সিইও) চিঠি পাঠিয়ে তা দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে।
এই আবহে হাইকোর্টের রায় নিঃসন্দেহে বড় বার্তা বহন করছে। দেশের নাগরিক হিসেবে এবং সরকারি কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালনে প্রাথমিক শিক্ষকরা যে আলাদা কোনও ছাড় পাবেন না, তা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল।
উল্লেখ্য, অতীতে কেরল হাইকোর্টের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টও একই রায় দিয়েছিল। শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, বিএলও-র কাজ করলে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। নিজেদের কাজ শেষ করে অতিরিক্ত সময়ে ভোটের কাজ করতে হবে। সেই রায় মেনেই এবার রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকদের কাজ করার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।