বড় ধাক্কা শাহজাহানের, সিবিআই তদন্তে হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৪ আগস্ট ২০২৫
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৯ সালে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তিন বিজেপি কর্মীকে খুনের ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। এই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত তৎকালীন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যান শাহজাহান। সোমবার তাঁর সেই আবেদনের রায় ঘোষণা করে আদালত। সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের রায় মোতাবেক অভিযুক্তের এই আবেদনের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে না। আদালতের এই রায়ের ফলে বেশ চাপে পড়লে শাহজাহান।
প্রসঙ্গত, আদালতের নির্দেশ মেনে জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে এই মামলার তদন্তভার হাতে নিয়েছে সিবিআই। সিবিআই সূত্রে খবর, ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে তারা। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে তৃণমূল থেকে ৬ বছরের জন্য শাহজাহানকে সাসপেন্ড করা হয়। দলের সমস্ত পদ থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের ৮ জুন সন্দেশখালির বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডল, দেবদাস মণ্ডল এবং সুকান্ত মণ্ডলকে খুনের অভিযোগ ওঠে। তাঁরা সকলেই বিজেপি করতেন। ভাঙ্গিপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ মণ্ডলের বাড়িতে একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতী হামলা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ। তাঁকে তাড়া করে নিয়ে গিয়ে গুলি করে খুন করা হয় বলে দাবি পরিবারের। প্রদীপের তুতো ভাই সুকান্তের বাড়িতেও দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছিল। একই কায়দায় তাঁকেও গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সন্দেশখালিরই অপর এক বাসিন্দা দেবদাস মণ্ডলকেও ওই সময় খুন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
মৃতদের পরিবারের দাবি, ওই খুনের মামলার প্রাথমিক চার্জশিটে নাম ছিল শাহজাহানের। কিন্তু পরে সিআইডির হাতে তদন্তভার গেলে চার্জশিট থেকে তাঁর নাম বাদ যায়। ২০২২ সালে অপর একটি খুনের মামলাতেও শাহজাহান জামিন পেয়ে যান। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ঘটনাটির তদন্তভার যায় সিআইডি-র হাতে। সেই সময়ে সাক্ষীদের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সিআইডি মামলার চূড়ান্ত চার্জশিট থেকে বাদ যায় শেখ শাহজাহানের নাম। এর পরেই কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয় মৃতদের পরিবারের পক্ষ থেকে। সিবিআই তদন্ত চেয়ে করা হয় আবেদনও। সেই আবেদন মঞ্জুর করে আদালত।
প্রসঙ্গত, রেশন দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়ে জেলবন্দি রয়েছেন শেখ শাহজাহান। এলাকার অনেকের কৃষিজমি জবরদখল, সেই অধিকৃত জমিতে মাছের ভেড়ি বানানো, ভেড়ির লিজের টাকা না দেওয়ার মতো নানা অভিযোগ উঠেছিল শাহজাহান ও তাঁর সঙ্গীদের বিরুদ্ধে। তাঁর জামিনের শুনানি চলছে কলকাতা হাইকোর্টে।