ঘুমের মধ্যে ভাঙল পাশের বাড়ি! উদ্ধারে মণ্ডপের শ্রমিকেরা
আনন্দবাজার | ০৪ আগস্ট ২০২৫
টিনের ছাউনির ঘরে ঘুমের মধ্যেই মাথার উপরে ভেঙে পড়ল পাশের পুরনো বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ। শনিবার ভোরে, মানিকতলা মেন রোডে কাঁকুড়গাছির ঘোষবাগানের এই ঘটনায় টিনের ঘরে আটকে ছিলেন সাত জন। স্থানীয় পুজো মণ্ডপের শ্রমিকেরা সকলকে উদ্ধার করে মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসার পরে ছ’জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও এক প্রৌঢ়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর বুকে, পায়ে ও মাথায় চোট লেগেছে।
বৃষ্টিতে শহরে পর পর বাড়ির অংশ ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটছে। এ দিনের ঘটনাস্থল যেখানে, কলকাতা পুরসভার সেই ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি শান্তিরঞ্জন কুণ্ডুর দাবি, শরিকি বিবাদের জন্য বাড়িটির সংস্কার হয়নি। পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে, শরিকি বিবাদ নিয়ে পুরসভা কড়া আইন আনছে না কেন? স্পষ্ট উত্তর মেলেনি।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, মানিকতলায় বেঙ্গল কেমিক্যালের কারখানার কয়েকশো মিটারের মধ্যেই ঘটেছে ওই ঘটনা। স্থানীয়দের দাবি, প্রায় ২০০ বছরের পুরনোবাড়িটিতে পুরসভা বিপজ্জনক নোটিস দিলেও একাধিক শরিকের কেউই সংস্কারে হাত লাগাননি। পাশের যে টিনের চালের ঘরের উপরে বাড়িটির একাংশ ভেঙে পড়ে, সেখানে তিন সন্তান, দাদার ছেলে, মা ও স্ত্রীকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলেন শ্যাম কবিঠিয়া। আদতে গুজরাতের বাসিন্দা শ্যাম পুরনো পোশাক সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে সংসার চালান। বড় ছেলে দশরথের পরীক্ষা ছিল এ দিন। কিন্তু সর্বস্ব চাপা পড়ে যাওয়ায় কী করে পরীক্ষা দিতে যাবে, বুঝতে পারছিল না সে। শ্যাম বলেন, ‘‘ঘুমের মধ্যেই বিকট শব্দ পাই। তাকিয়ে দেখি, বুকের উপরে পাথর পড়ে রয়েছে। নড়তে পারছিলাম না। বড় ছেলে চাঙড়ের ফাঁক গলে বেরিয়ে পাড়ার পুজো মণ্ডপ থেকে লোকজন ডেকে আনে।’’
স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি বলেন, ‘‘বিপজ্জনক অংশ দ্রুত ভাঙতে বলেছি। শরিকি ঝামেলার কারণে বিপজ্জনক নোটিস দিয়েও কাজ হয়নি। বড় কিছু ঘটতে পারত।’’ বাড়ির শরিক বাবলু বসুমল্লিক বললেন, ‘‘আমার মামাবাড়ির অংশ ভেঙেছে। সকলে কথা বলে দ্রুত কী পদক্ষেপ করা যায়, দেখব।’’