অবশেষে গ্রেফতার বাংলাদেশের ‘কুখ্যাত’ দুষ্কৃতী! তদন্তে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ
আনন্দবাজার | ০৪ আগস্ট ২০২৫
বাংলাদেশে একাধিক অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। খুন, অপহরণ, জমি দখলের মতো গুরুতর অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে তাঁকে খুঁজছিল বাংলাদেশ পুলিশ। সেই ওপার বাংলার পুলিশের খাতায় অন্যতম ‘ওয়ান্টেড’ দুষ্কৃতীর খোঁজ পাওয়া গেল এ পার বাংলার নদিয়া জেলায়। একটি আখড়ায় নাম ও পরিচয় গোপন করে দীর্ঘ দিন ধরে আত্মগোপন করে রেখেছিল নিজেকে। এসটিএফের অভিযানে অবশেষে নদিয়ার তেহট্ট থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই বাংলাদেশি দুষ্কৃতীকে। ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলা জুড়ে। রবিবার তেহট্ট মহকুমা আদালতে পেশ করে দুষ্কৃতীর হেফাজত চেয়েছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম মহম্মদ হাসেম মল্লিক ওরফে হাসেম আলি মল্লিক। বয়স ৬০। বঙ্গ পুলিশের এসটিএফের এসআই মহম্মদ আবদুন নূর চৌধুরী হাসেমের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সূত্র মারফত জানা যায়, বাংলাদেশে জঘন্য অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হাসেম ভুয়ো ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে তেহট্ট বালিউরা পূর্ব পাড়ায় আত্মগোপন করে আছেন। সেই খবর পেয়েই স্থানীয় পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালায় এসটিএফ। গ্রেফতার করা হয় বাংলাদেশি বৃদ্ধকে।
যদিও ধৃত বাংলাদেশি দুষ্কৃতীর কাছে কোনও ভারতীয় নথি ছিল না। তবে পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ধৃত বৃদ্ধ স্বীকার করেছেন, বাংলাদেশে অপরাধের পর তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলছিল। সেই মামলা থেকে বাঁচতেই ভারতে পালিয়ে আসেন তিনি।
রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ধৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একাধিক জেলায় দুষ্কৃতীমূলক কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ‘সুপারি কিলার’ হিসাবেও ধৃত ব্যক্তি একাধিক খুনের ঘটনায় যুক্ত ছিলেন বলে সূত্রের খবর। এ ছাড়াও খুনের চেষ্টা, অপহরণ, জমি দখল-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে ধৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ২০১৯ সালের একটি মামলায় বাংলাদেশের তাঁর বিরুদ্ধে ‘লুক আউট’ নোটিস রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ধৃত ব্যক্তিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তিনি ইতিমধ্যেই ভারতীয় নথি তৈরি করেছে। রয়েছে আধার কার্ডও। ধৃত ব্যক্তিকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চাইছেন গোয়েন্দারা। যেমন বাংলাদেশ থেকে কী ভাবে ভারতে এলেন? জাল পরিচয়পত্রই বা কোথা থেকে তৈরি করলেন? ধৃত একাই এ দেশে এসেছেন না কি অন্য কেউ যুক্ত আছেন? ভারতে নাশকতার কোনও ছক ছিল কি না? একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা। ফরেনার্স অ্যাক্ট ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।