রাজ্যে দুটি এসটিএফ থানার গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে স্থগিতাদেশ কলকাতা হাইকোর্টের
হিন্দুস্তান টাইমস | ০৪ আগস্ট ২০২৫
অপরাধ দমনে রাজ্য সরকারের তৈরি দুটি স্পেশাল টাস্ক ফোর্স থানার গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ। বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, এই ধরনের সিদ্ধান্ত নতুন ফৌজদারি আইন ভারতীয় ন্যায়বিচার সংহিতা-এর কাঠামোকে দুর্বল করতে পারে।
আদালত সূত্রে জানা যাচ্ছে, রাজ্য সরকার চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি দুটি আলাদা গেজেট জারি করে ঘোষণা করেছিল, একটি এটিএফ থানা তৈরি হচ্ছে উত্তরবঙ্গের সমস্ত জেলার জন্য শিলিগুড়ির অম্বিকানগরে এবং অপরটি দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলার জন্য সল্টলেকে। তবে এই দুই থানার আওতা কলকাতা পুলিশ এলাকার বাইরে। ১৬ মে-র একটি পৃথক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে রাজ্য আরও জানিয়েছিল, দুটি থানাকে যথাক্রমে শিলিগুড়ি ও বিধাননগর এসিজেএম আদালতের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এই পদক্ষেপকে ঘিরেই প্রশ্ন তোলে আদালত। হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে জানায়, শুধুমাত্র একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে কোনও একক থানা গোটা উত্তরবঙ্গ বা দক্ষিণবঙ্গের মতো বিস্তীর্ণ অঞ্চলের জন্য কার্যকর করা যায় না। বিচারপতিদের মতে, এতে ন্যায়বিচারে নাগরিকের অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে পারে। আদালতের ভাষায়, ন্যায় পাওয়া হল মৌলিক অধিকার। যদি কোনও প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ এফআইআর নথিভুক্ত করতে না পারেন, তাহলে তা আইনি কাঠামোর বিপরীত।
বিচারপতিরা আরও বলেন, ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় থানার ‘স্থানীয় এলাকা’র পরিভাষা নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে, যা আদালতের 'স্থানীয় এখতিয়ার' থেকে আলাদা। এই প্রেক্ষাপটে আদালতের মত, রাজ্য পছন্দসইভাবে এলাকা বেছে নিয়ে থানা স্থাপন করেছে, যা আইনত যুক্তিসঙ্গত নয়।
তবে আদালত এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে, ইতিমধ্যে দুটি থানায় নথিভুক্ত হওয়া মামলা ও তদন্ত এই স্থগিতাদেশের মধ্যে পড়বে না। সেই সব মামলার ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে মূল রিট মামলার রায়ের উপর। রাজ্যের পক্ষ থেকে অ্যাডিশনাল অ্যাডভোকেট জেনারেল দাবি করেন, এই ধরনের প্রশাসনিক পদক্ষেপ সম্পূর্ণভাবে রাজ্য সরকারের অধিকারভুক্ত এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী আদেশে বলা হয়েছে, এই বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অথবা পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।