‘রবীন্দ্রনাথ-বিবেকানন্দ-বঙ্কিমচন্দ্রের ভাষা’, বাংলাদেশি বিতর্কে বাংলা ভাষার গৌরব মনে করালেন মমতা
প্রতিদিন | ০৪ আগস্ট ২০২৫
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলা ভাষায় কথা বললে ‘বাংলাদেশি’ তকমা দেওয়া অতীত, এবার বাংলা ভাষাকেই ‘বাংলাদেশি’ ভাষা বলে বিতর্কের মুখে দিল্লি পুলিশ। বঙ্গ ভবনে আসা দিল্লি পুলিশের ওই চিঠি ঘিরে এখন তরজা তুঙ্গে। তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করিয়ে দিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সৃষ্টি, বাংলা ভাষার গৌরবের কথা। সোশাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, ‘যে ভাষায় জাতীয় সঙ্গীত, জাতীয় মন্ত্র তৈরি হয়েছে, যে ভাষায় কোটি কোটি মানুষ রোজ কথা বলেন, লেখেন, ভারতীয় সংবিধান স্বীকৃতি সেই ভাষাকে বাংলাদেশি বলা হচ্ছে!’ এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের সরকারকে বাংলা-বিরোধী বলে উল্লেখ করে তিনি দ্রুত কঠোরতম শাস্তির দাবি করেছেন।
যা নিয়ে এত বিতর্ক, এক্স হ্যান্ডেলে দিল্লি পুলিশের সেই বিতর্কিত চিঠিটি পোস্ট করেছে রাজ্যের শাসকদল। তাতে উল্লেখ, বাংলা অনুবাদক দরকার দিল্লি পুলিশের। কারণ, কয়েকদিন আগে দিল্লি পুলিশ বাংলাদেশি সন্দেহে ৮ জনকে আটক করে। তাঁদের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। আর সেসব নথিগুলি বাংলা ভাষায় লেখা। সেসব নথির তথ্য যাচাইয়ের জন্য একজন অনুবাদক প্রয়োজন। আর সেই চিঠিতেই বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি’ ভাষার তকমা দেওয়া হয়েছে।
এর প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে বাংলার শাসকদল তৃণমূল। যে ভাষা ধ্রুপদী ভাষার তকমা পেয়েছে, যে ভাষায় বিশ্ববরেণ্য সমস্ত সৃষ্টিকর্ম হয়েছে, যে ভাষা দেশের অন্যতম ‘অফিশিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ’, তাকে ‘বাংলাদেশি’ বলে তকমা দেওয়ার অর্থ সংবিধানকে অপমান। নিজের এক্স হ্যান্ডলে এমনই মত প্রকাশ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই ঘটনাকে ‘অপমানজনক, সংবিধান-বিরোধী, দেশবিরোধী’ বলে দিল্লি পুলিশকে বিঁধেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালি ‘হেনস্তা’ ও বাংলা ভাষার অপমানের প্রতিবাদে নতুন করে ‘ভাষা আন্দোলন’ শুরু করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। ২৭ জুলাই থেকে বাংলার ব্লকে ব্লকে এই মিছিল, ধরনা কর্মসূচি শুরু হয়েছে। বোলপুর অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের মাটিতে নিজে হেঁটে সেই আন্দোলনের সূচনা করেছেন তিনি। তবে এবার বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি’ তকমা দেওয়ায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও জোরদার করতে চলেছে বাংলার শাসকদল।