• অধিবেশনে তর্কাতর্কি, প্রতিবাদ, শিলিগুড়ির কাউন্সিলর দিলীপ বর্মনকে শোকজ তৃণমূলের
    প্রতিদিন | ০৪ আগস্ট ২০২৫
  • অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: অধিবেশন চলাকালীন নিজের দাবি নিয়ে সরব হওয়া, চেয়ারম্যান, মেয়রের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়া এবং তারপর প্রতিবাদে নেমে রাস্তা অবরোধ। এসব কাজকে ‘দলবিরোধী’ অ্যাখ্যা দিয়ে শিলিগুড়ির মেয়র পারিষদ তথা ৪৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দিলীপ বর্মনকে শোকজ করল তৃণমূল। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি তাঁকে শোকজ নোটিস পাঠিয়ে আগামী ৩ দিনের মধ্যে জবাব চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ শোরগোল শুরু হয়েছে এলাকায়।

    ঘটনা ঠিক কী ঘটেছিল? গত ৩০ জুলাই শিলিগুড়ি পুরনিগমে মাসিক অধিবেশন ছিল। অধিবেশনে বক্তব্য রাখছিলেন চেয়ারম্যান প্রতুল চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্যের মাঝেই মেয়র পারিষদ তথা ৪৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দিলীপ বর্মন উঠে দাঁড়িয়ে নিজের ওয়ার্ডের সমস্যার কথা বলতে থাকেন। অভিযোগ তোলেন, তাঁর ওয়ার্ডে বেআইনি বাড়ি তৈরি হচ্ছে। বারবার তা জানানোর পরও পুরনিগম অভিযান চালিয়ে তা ভাঙছে না, আবর্জনা পরিষ্কার করা হচ্ছে না। তাঁর অভিযোগ শুনে চেয়ারম্যান আপত্তি তোলেন। চেয়ারম্যানের দাবি, এসব অভিযোগ ঠিক নয়। কাজ ঠিকই হচ্ছে। তারপরও দিলীপ বর্মন চেয়ারম্যান ও মেয়রের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়ান। যার জেরে অধিবেশন থেকে বের করে দেওয়া হয় তাঁকে।

    এতেই খেপে ওঠেন দিলীপ বর্মন। তাঁর অভিযোগ, রাজবংশী বলে তাঁকে এভাবে অপমান করা হল। এর প্রতিবাদে পরেরদিন তিনি রাস্তা অবরোধ করেন। মেয়র সম্পর্কে আপত্তিজনক মন্তব্যও শোনা যায় তাঁর মুখে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কানে এ খবর পৌঁছয়। প্রসঙ্গত, শনিবারই দার্জিলিংয়ের তৃণমূল সংগঠনের দায়িত্বে গড়ে দেওয়া হয়েছে কোর কমিটি। সেই কোর কমিটির সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি শোকজ নোটিস পাঠিয়েছেন দিলীপ বর্মনকে। লিখেছেন, ”গত ৩০ জুলাই বোর্ড মিটিংয়ে আপনার আচরণ এবং পরবর্তীকালে মিডিয়ার সামনে আপনার অযাচিত বক্তব্য পার্টির ভাবমূর্তিকে বিশেষ ভাবমূর্তিকে বিশেষভাবে আঘাত করেছে। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের এই আচরণের জন্য আপনাকে তিনদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।”

    এনিয়ে দিলীপ বর্মনের বক্তব্য, ভালো কাজ করতে গিয়ে যদি শোকজের মুখে পড়তে হয় তাহলে ক্ষতি নেই। আমি জবাব দেব। তবে জবাবটা আমি দেব ২০১২ সাল থেকে। সেদিন থেকে কী কী কাজ করেছি, কী কী অসুবিধায় পড়তে হয়েছে, সব বলব। আর ৩০ জুলাই যে ঘটনা ঘটেছে, তা আমি মনে করি, রাজবংশীদের অপমান করা হয়েছে। চেয়ারম্যান, ডেপুটি মেয়র যে আচরণ করেছেন, তা সঠিক কি না, তাঁরাই বুঝবেন। তাঁরা না বুঝলে জনগণ বুঝে নেবে। আমি বরাবর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতি, আদর্শে রাজনীতি করি। দীর্ঘদিন ধরে দলের নানা কাজ নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু সদুত্তর পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে এসব কথা প্রকাশ্যে বলেছি।”

    শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেবের পালটা বক্তব্য, ”এটা দলের সিদ্ধান্ত। আমি এনিয়ে কিছু বলতে পারব না। তবে উনি যে অভিযোগ তুলছেন, তা সম্পূর্ণ ভুল। আমরা রাজবংশীদের গুরুত্ব দিয়ে পঞ্চানন বর্মার নামে বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, তাঁর আবির্ভাব তিথিতে রাজ্য সরকার ছুটি ঘোষণা করেছে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)