রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প কন্যাশ্রী নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে উত্তাল মালদহের চাঁচল-২ ব্লকের জে এইচ আর সিনিয়র মাদ্রাসা। মাদ্রাসা চত্বরে ছাত্রছাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগে ক্ষোভে ফুঁসছে অভিভাবক ও ছাত্রসমাজ।
অভিযোগ, ভর্তি ফি হিসেবে সরকারি নির্ধারিত ২৪০ টাকার জায়গায় নেওয়া হচ্ছে প্রায় দ্বিগুণ ৫০০ টাকা। রশিদে ২৪০ টাকা লেখা থাকলেও বাকি টাকা দেওয়া হচ্ছে ‘নগদে’, যার কোনও সরকারি হিসেব নেই। শুধু ভর্তি ফি নয়, কন্যাশ্রী ও স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ ফর্ম পূরণ করতেও দিতে হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, যা বাইরে অনলাইনে ৩০ টাকার মধ্যেই করা সম্ভব।
অভিযোগকারীদের বক্তব্য, বাইরে ফর্ম পূরণ করালে তা বাতিল করে দেওয়ার হুমকিও দিচ্ছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এক ছাত্রীর কথায়, ‘আমরা বাইরে ফর্ম ফিলআপ করাতে চাইলে বলা হচ্ছে সেটা বাতিল করে দেওয়া হবে। বাধ্য হয়ে মাদ্রাসায় করাতে হচ্ছে, আর তার জন্য অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে।’
শুধু তাই নয়, আইডি কার্ড হারালে তা নতুন করে দেওয়ার জন্যও দাবি করা হচ্ছে টাকা। প্রজেক্ট খাতা বাইরে ১০ টাকায় মেললেও মাদ্রাসা থেকে নেওয়া হচ্ছে ২০ টাকা, আর বাইরে থেকে কিনলে নম্বর কেটে নেওয়ার ভয় দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ। ছাত্রছাত্রীদের দাবি, এই অবৈধ টাকার লেনদেনে মাদ্রাসার সুপার ওয়াজেদ আলি এবং এক শিক্ষক জড়িত। তাঁদের বিরুদ্ধেই লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে ব্লক প্রশাসনের কাছে।
এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে চাইলে মাদ্রাসার সুপার কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। তবে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে ব্লক প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার। চাঁচল ২ ব্লকের বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী জানান, ‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
ঘটনার জেরে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। মালদহ জেলা তৃণমূল সভাপতি ও চাঁচল বিধানসভার বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সিও জানিয়েছেন, বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হন, তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রছাত্রীদের একাংশ ইতিমধ্যেই দাবি তুলেছে, যে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়েছে, তা অবিলম্বে ফেরত দিতে হবে।