টানা বৃষ্টিতে নানুরের ঘিদহে অজয়ের বাঁধে ধস, আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা
বর্তমান | ০৩ আগস্ট ২০২৫
সংবাদদাতা, বোলপুর: অজয় নদের বাঁধে ফের ধস ও ফাটল দেখা দেওয়ায় নানুর বিধানসভার ঘিদহ গ্রাম ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ঝাড়খণ্ডের শিকাটিয়া ড্যাম সহ রাজ্যের বিভিন্ন জলাধার থেকে বিপুল জল ছাড়া হয়েছে। সেই জল এসে পড়ছে ছোট-বড় নদীতে। অজয় নদের জলস্তর বাড়তেই নদী বাঁধে একাধিক জায়গায় ধস ও ফাটল তৈরি হয়েছে। নদীর জল এখনও বাঁধ থেকে কিছুটা দূরে থাকলেও মানুষের আতঙ্ক বাড়ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র কয়েক মাস আগেই অজয় নদের বাঁধ সংস্কারের জন্য প্রায় ১০কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। তারমধ্যে তিন কোটি টাকা খরচ করে বাঁধ সংস্কার শুরু হয়েছিল। সেই কাজ চলাকালীন ফের বাঁধে ধস ও একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দেওয়ায় নির্মাণের গুণমান নিয়ে উঠছে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই খবর জানতে পেরে শনিবার পরিস্থিতি দেখতে ঘিদহ গ্রাম পরিদর্শনে যান বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ ও স্থানীয় বিধায়ক বিধান মাজি। তাঁরা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ ঘুরে দেখেন। বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন। সভাধিপতি এলাকার বাসিন্দাদের আতঙ্কিত না হওয়ার বার্তা দেন।
২০২১সালের অক্টোবর মাসে অজয় নদ বিধ্বংসী রূপ নিয়েছিল। তার সাক্ষী রয়েছে সুন্দরপুর সহ বহু গ্রামের মানুষ। সেই বছর ঝাড়খণ্ডের শিকাটিয়া বাঁধ থেকে জল ছাড়ায় গভীর রাতে হু হু করে গ্রামে ঢুকে পড়েছিল নদীর জল। প্রাণ হাতে নিয়ে বহু মানুষ কোনওমতে নদীর বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছিলেন। সুন্দরপুরের ৮৮টি পরিবার কার্যত এক রাতেই সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। মাটির ঘর, দোতলা ও তিনতলা পাকা বাড়িও রক্ষা পায়নি। তাঁদের চোখের সামনে সম্পূর্ণ গ্রাম নদীর জলে ভেসে গিয়েছিল। সেই আতঙ্ক গ্রাস করছে। তাই ঘিদহ ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ প্রশাসনের আশ্বাসে পুরোপুরি ভরসা পাচ্ছেন না। তাঁরা অজয়ের জলস্ফীতি ও বাঁধের বেহাল অবস্থার দিকে কড়া নজর রাখার দাবি তুলেছেন। অনেকেরই মত, দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা না হলে পরিস্থিতি আবারও নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। তবে এদিন বাঁধ পরিদর্শনের পর এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করেছেন সভাধিপতি। তিনি বলেন, বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের ঘিদহ গ্রামে আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান কর্মসূচিতে যোগদান করতে এসে গ্রামবাসীদের কাছে নদী বাঁধ ধসে যাওয়ার অভিযোগ পাই। বর্ষার বর্তমান পরিস্থিতি বুঝে বাঁধ পরিদর্শন করি। এই বাঁধ সংস্কারের জন্য ১০কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে তিন কোটি টাকার কাজ হয়েছে। তারপরও কীভাবে ধস নামল বুঝতে পারছি না। নদীতে জল বাড়লে বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা রয়েছে। তাই বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে সেচদপ্তরকে খুব তাড়াতাড়ি জানাব।