• বর্ধমানের বহু জমি জলের তলায়, ক্ষতিপূরণের দাবি
    বর্তমান | ০৩ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: ডিভিসির ছাড়া জলে প্রতি বছর ধান চাষের জমি নষ্ট হওয়া রুটিনে পরিণত হয়ে গিয়েছে। ডিভিসি ব্যাপক জল ছাড়ায় পূর্ব বর্ধমানের রায়না-১ ও ২, জামালপুর, খণ্ডঘোষের বহু জমি জলের তলায় চলে গিয়েছে। কোনও কোনও জমিতে কোমর সমান জল জমে গিয়েছে। ডিভিসি এখনও জল ছাড়া বন্ধ করেনি। তাই এই জল নামার পর কবে চাষ শুরু হবে, তা নিয়ে চাষিরা সংশয়ে রয়েছে। চাষিদের দাবি, বিপুল ক্ষতির জন্য ডিভিসির ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। যখন জল দরকার, তখন ডিভিসির পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া যায় না। আবার যখন দরকার নেই, তখন ব্যাপক জল ছেড়ে চাষের জমি ডুবিয়ে দেওয়া হয়। দক্ষিণ দামোদরে মূলত গোবিন্দভোগ ধান চষ হয়। জলের জন্য এখনও চাষ গতি পায়নি। 

    রায়না-২ ব্লকের চাষি বিপ্লব দাস বলেন, ডিভিসি বর্ষার সময় নিজের ইচ্ছেমতো জল ছাড়ে। চাষিদের কথা তারা ভাবে না। প্রতিবছরই বর্ষার সময় ব্যাপক জল ছাড়া হচ্ছে। গত বছরও চাষ করার পর ধান জমি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এবার জমিতে জল জমে থাকায় বীজ রোপণ করা যাচ্ছে না। ১৫ আগস্টের মধ্যে রোপণের কাজ শেষ না করা গেলে ফলন ধাক্কা খাবে। চাষের ক্ষতিপূরণ ডিভিসিকে দেওয়া উচিত। আর এক চাষি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার সারের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারপর জল ছেড়ে বিপত্তি তৈরি করছে। জলাধারগুলিতে নাব্যতা বাড়ানো হলে এই সমস্যা তৈরি হতো না। কেন্দ্রীয় সরকারের সেদিকে নজর নেই। একটু ভারী বৃষ্টি হলেই ডিভিসি জল ছেড়ে দিচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়ছে, জেলার নদীগুলিতে জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। জামালপুর, রায়না, খণ্ডঘোষে একধিক খালের জল টপকে জমির উপর দিয়ে বইছে। পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জল বের করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যেসব খালগুলি মজে গিয়েছে সেগুলি সংস্কার করা হচ্ছে। 

    পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বলেন, এবার  ডিভিসির কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে। রাজ্য সরকার চাষিদের জন্য কৃষক বন্ধু প্রকল্প চালু করেছে। শস্যবিমা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার চাষিদের শুধু বঞ্চনা করছে না, জল ছেড়ে তাঁদের ক্ষতি করছে। জলাধারগুলিতে ধারণ ক্ষমতা কমে গিয়েছে। ঝাড়খণ্ডে বা এরাজ্যে ভারী বৃষ্টি হলেই জল ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ গ্রীষ্মের সময় পর্যাপ্ত জল তারা দিচ্ছে না। তখন জলের অভাবে চাষ ঠিক মতো করা যায় না। 
  • Link to this news (বর্তমান)