• অগ্রদীপের চরবিষ্ণুপুরে ফের ভয়াবহ ভাঙন শুরু, ভাগীরথীতে একের পর এক উপড়ে পড়ছে গাছ
    বর্তমান | ০৩ আগস্ট ২০২৫
  • সংবাদদাতা, কাটোয়া: কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের চরবিষ্ণুপুরে ফের ভাগীরথীর ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিনিয়ত নদী পাড়ের মাটি ধসে পড়ছে জলে। গাছগুলি জলে উপড়ে পড়ছে। আতঙ্কে ঘুম উবেছে বাসিন্দাদের। চরকবিরাজপুর, চরকালিকাপুর গ্রামের মানুষজন আতঙ্কের প্রহর গুনছেন। গ্রামে কখন জল ঢুকে পড়বে সেই আতঙ্কে রয়েছেন বাসিন্দারা। শুক্রবার বিকেলে কাটোয়ার এসডিপিও এর নেতৃত্বে পুলিস বাহিনী গ্রামে ঘুরে বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেছেন। এসডিপিও কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, আমরা তিনটি গ্রামে ঘুরে পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখেছি। নদীর পাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। আমরা গ্রামের প্রাথমিক স্কুলটিও দেখে এসেছি। যাতে গ্রামে জল ঢুকলেই বাসিন্দাদের ওখানে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে যেতে পারি। কাটোয়া-২ ব্লকের অগ্রদ্বীপ পঞ্চায়েতের চর সাহাপুর, চর বিষ্ণুপুর, চর কালিকাপুর গ্রামগুলির পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে ভাগীরথী। চর বিষ্ণুপুর, চর কবিরাজপুর মৌজায় ফের ভাঙন শুরু হয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, প্রতিনিয়ত নদীর পাড় ভেঙে পড়ছে জলে। ধীরে ধীরে গোটা গ্রামটাই গিলে নিচ্ছে নদী। গ্রাম ছেড়ে বেশিরভাগ বাসিন্দা আগেই চলে গিয়েছে। এখনও চর বিষ্ণুপুরে যে চার পাঁচটি বাড়ি ও চাষের জমি রয়েছে তা ভাঙনের জেরে নিশ্চিহ্ন হতে বসেছে। গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ১৯৯৬ সালের ভয়াবহ বন্যার পর ভাগীরথী ভাঙনে কয়েকবারই নদী তার গতিপথ বদলেছে। আর চর বিষ্ণুপুর গ্রামের সঙ্গে বিষ্ণুপুর গ্রামকে আলাদা করেছে ভাগীরথী।  পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমার অগ্রদ্বীপ অঞ্চলের চর বিষ্ণুপুর গ্রামে একসময়ে ১৪৩৫ জনের বাস ছিল। ১৯৯৮ সাল থেকে ভাগীরথী চর বিষ্ণুপুর গ্রাম একটু একটু করে ভাগীরথীর গর্ভে বিলীন হতে শুরু করে। একে একে গ্রামের দুর্গা দালান, কালীমন্দির, প্রাইমারি স্কুল, ক্লাবঘর, খেলার মাঠ সহ জমি, বাপ ঠাকুরদার বসত ভিটে সবই চোখের সামনে নদীগর্ভে বিলীন হতে দেখেছেন গ্রামের বাসিন্দারা। চর বিষ্ণুপুর, চর কবিরাজপুর, চর কালিকাপুর গ্রামগুলি পূর্ব বর্ধমান জেলার হলেও নদীয়া জেলার মূল ভূখণ্ড এর সঙ্গে জুড়ে রয়েছে। এর আগে চর সাহাপুর, কালিকাপুর মৌজায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে ভাঙন রোধে কাজ করা হয়েছে। যদিও স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙন রোধে কাজ দায়সারাভাবেই করেছে সেচদপ্তর। কালিকাপুর, চর বিষ্ণুপুরে যেখানে কাজ হওয়ার কথা ছিল সেখানে কাজ না করে অন্য জায়গায় কয়েকটি বালির বস্তা দিয়ে কাজ করেছে সেচদপ্তর। চর বিষ্ণুপুরে কাজ না হলে আগামী দিনে গ্রামটির কোনও চিহ্ন থাকবে না। যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ মানতে নারাজ সেচদপ্তর। 

    চর কবিরাজপুর গ্রামের বাসিন্দা সত্যেন্দ্রনাথ সরকার, বিজয় সরকার বলেন, এই গ্রামে যেভাবে ভাঙন হচ্ছে তাতে ভাগীরথীর জল বাড়লেই পুরো তিনটে গ্রাম ভেসে যাবে। আমরা খুব আতঙ্কে রয়েছি। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সদস্য নিতাইসুন্দর মুখোপাধ্যায় বলেন, ওই মৌজাগুলিতে ভাঙন ব্যাপক আকার নিয়েছে। বাড়ি ঘর ভেঙেছে। সব্জি খেতে জল ঢুকেছে। আমরা বিষয়টি বিধায়ককে জানিয়েছি। • নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)