• না জানিয়ে জল ছেড়ে বাংলার মানুষের উপর অত্যাচার করছে ডিভিসি: মানস
    বর্তমান | ০৩ আগস্ট ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, পুরশুড়া: না জানিয়ে জল ছেড়ে বাংলার মানুষের উপর অত্যাচার করছে ডিভিসি। আরামবাগ মহকুমা এলাকায় প্লাবিত পরিস্থিতিতে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিয়ে শনিবার ডিভিসিকে এভাবেই তোপ দাগলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া। এদিনের বৈঠকে জেলার সর্বস্তরের আধিকারিকদের নিয়ে টিম করে কাজ করার নির্দেশও দিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, এবার হুগলি জেলায় বাঁধ ভেঙে বন্যা কোথাও হয়নি। রেকর্ড বৃষ্টির জেরে কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। গত বছর ভেঙে যাওয়া বাঁধের অংশে কাজ হয়েছে। সেগুলি অবশ্য এখন কাঁচা রয়েছে। সর্বক্ষণ সেই বাঁধগুলির পরিস্থিতির দিকে আমরা নজর রাখছি। ডিভিসি ক্রমাগত জল ছাড়ছে বলে নদী তীরবর্তী এলাকার জমা জল বেরতে পারছে না। ডিভিসি এদিনও প্রায় ৬৫ হাজার কিউসেক হারে জল ছেড়েছে। 

    এদিন খানাকুলে রূপনারায়ণ নদের জলস্তর চরম বিপদ সীমা ছুঁইছুঁই অবস্থায় ছিল। আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছেন খানাকুলের নিচু এলাকার বাসিন্দারা। ইতিমধ্যেই মারোখানা, জগৎপুর পঞ্চায়েত এলাকার একাধিক জায়গায় জল ঢুকে গিয়েছে। তারফলে বাজার ও রাস্তা ঘাট ডুবে যায়। তবে আরামবাগ ব্লক এলাকায় তুলনামূলকভাবে আগের থেকে জল কিছুটা নেমেছে। সামান্য হলেও আরামবাগের মায়াপুরে রাজ্য সড়কের উপর এদিনও জল বইতে দেখা যায়। সাম্প্রতিক প্লাবন পরিস্থিতি নিয়ে এদিন পুরশুড়া বিডিও অফিসে প্রশাসনিক বৈঠক করতে আসেন রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। তাঁদের সঙ্গে নবান্ন ও হুগলি জেলা প্রশাসনের কর্তারাও ছিলেন। মন্ত্রী মানসবাবু ছাড়াও পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পরিবহণ মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী, কৃষি বিপণন মন্ত্রী বেচারাম মান্না, আরামবাগের সাংসদ মিতালি বাগ, বিধায়ক অসীমা পাত্র, রামেন্দু সিংহ রায় সহ অনেকেই ছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে চলে বৈঠক। বৈঠকের মাঝে অবশ্য ফিরহাদ হাকিম বেরিয়ে যান। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাঠিয়েছেন। ত্রাণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মানুষের পাশে রয়েছেন। 

    মানসবাবু সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, এবার রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছে। গত ২৬ বছরে এমন বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে কেউ মনে করতে পারছেন না। তার জেরে কিছু জায়গা জলমগ্ন হয়েছে। কিন্তু, এই পরিস্থিতির মধ্যেও ডিভিসি আমাদের না জানিয়ে জল ছেড়ে দিচ্ছে। তবু আমরা সতর্কতা নিচ্ছি। যেখানে জল জমে আছে সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির হিসেবও হচ্ছে। 

    তিনি জানান, এদিন পর্যালোচনা বৈঠকে হুগলি জেলায় মানচিত্র ধরে খালগুলির প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে প্রশাসনকে বলেছি। খালের যেসব অংশ মজে গিয়েছে সেখানে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব জায়গায় অবৈধ নির্মাণ রয়েছে সেখানেও নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আগামী দিনে যাতে জমা জলে হুগলি জেলায় ক্ষতি না হয়, তা দেখতে হবে। 

    তাঁর অভিযোগ, ২০১৫ সাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে বন্যা নিয়ন্ত্রণে কোনও বরাদ্দ দেয়নি। বিজেপির জন প্রতিনিধিরা এখানে থাকলেও কেন্দ্রের থেকে কোনও বরাদ্দ আসেনি। বরং রাজ্যের কাজে বাধা দিচ্ছে। 

    সম্প্রতি বিজেপির এক রাজ্য নেতার সঙ্গে স্লোগান বিতর্কে জড়িয়েছিলেন খানাকুলের ‘সাহসী তৃণমূল কর্মী’ মুন্সি তাবারক আলি ওরফে মইদুল। এদিন বাড়িতে গিয়ে দেখা করে তাঁর পাশে থাকার আশ্বাস দেন ফিরহাদ হাকিম। • নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)