কোন্নগরে তৃণমূল নেতা হত্যায় গ্রেপ্তার কুখ্যাত দুষ্কৃতীর ভাই সহ তিন
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০২ আগস্ট ২০২৫
হুগলির কোন্নগরে তৃণমূল নেতা পিন্টু চক্রবর্তী ওরফে মুন্না খুনের ঘটনায় বড় অগ্রগতি। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিনজন দুষ্কৃতীকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছে কুখ্যাত দুষ্কৃতী ‘বাঘা’র ভাই। এছাড়াও ধরা পড়েছে দু’জন সুপারি কিলার। অভিযুক্তদের বারাসত ও বেলঘড়িয়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি, কানাইপুর এলাকার এক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে, যিনি নিহত নেতার ঘনিষ্ঠ বলে জানা গিয়েছে।
গত ৩০ জুলাই, বুধবার সন্ধ্যায় কানাইপুরে নিজের গ্যাস অফিসের সামনে দুষ্কৃতীদের হামলায় প্রাণ হারান তৃণমূল নেতা মুন্না। দুষ্কৃতীদের ধারালো অস্ত্রের এলোপাথাড়ি কোপে তাঁর একটি হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা হুগলি জেলায়।
তদন্তে নেমে পুলিশ স্থানীয় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। মুন্নার অফিস সংলগ্ন একটি পানশালার ক্যামেরায় ধরা পড়ে দুই সন্দেহভাজনের গতিবিধি। সেই সূত্র ধরেই তদন্তের জাল বিছিয়ে পুলিশ গ্রেপ্তার করে অভিযুক্ত তিনজনকে। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, জমি সংক্রান্ত বিবাদ থেকেই এই খুনের ঘটনা। জানা গিয়েছে, ডানকুনিতে নিহত নেতার নামে একাধিক সম্পত্তি ছিল, যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল।
তদন্তকারীদের দাবি, এই ঘটনায় আরও কয়েকজন অভিযুক্ত রয়েছে, তাঁদের চিহ্নিত করা গিয়েছে এবং দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে। আটক ব্যবসায়ীর ভূমিকা নিয়েও তদন্ত চলছে। পিন্টু চক্রবর্তী ‘ঘনিষ্ঠ’ ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের কর্তা মানস রায় জানিয়েছেন, গত ছ’মাস ধরে মুন্না মানসিকভাবে চাপের মধ্যে ছিলেন। তবে সেই অস্থিরতার পেছনে জমিজমির বিবাদই ছিল কি না, সে বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।
তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও, এখনও পর্যন্ত পুলিশ খুনের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য ও সুপারি কিলারদের নিয়োগকারীর পরিচয় নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানায়নি। তবে তদন্তকারীরা আশ্বস্ত করেছেন, খুব শিগগিরই মূল ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের কাছে দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানাচ্ছে তৃণমূল নেতৃত্ব।