খিদিরপুরের অরফ্যানগঞ্জ বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর কলকাতার বাজারগুলির অগ্নি সুরক্ষা নিয়ে বাড়তি সতর্কতা নিচ্ছে পুরসভা। দুর্ঘটনার পরই শহরের পুর বাজারগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত নেয় কলকাতা পুরসভা। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বর্তমানে ৫৩টি পুরসভার বাজারে ‘ফায়ার অডিট’-এর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে।
এই পরিদর্শনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দমকল দফতরকে। ইতিমধ্যে, কলকাতার ১৩টি বাজারে ফায়ার অডিটের প্রাথমিক পর্ব শেষ হয়েছে। পুরসভার সূত্রে খবর, অডিটের কাজ শেষ হওয়া বাজারগুলির মধ্যে রয়েছে কলেজ স্ট্রিট, বাঁশদ্রোণী, লেক রোড, নিউ আলিপুর, পার্ক সার্কাস, গড়িয়াহাট, বকুলতলা সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বাজার।
গত ৭ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত দমকল ও পুরসভার যৌথ টিম এই বাজারগুলিতে সরেজমিনে পরিদর্শন চালিয়েছে। কোথায় জলের উৎস রয়েছে, কোন উৎস সক্রিয়, কোথায় পাম্পিং স্টেশন বা রিজার্ভার গড়ে তোলা প্রয়োজন সেসব খুঁটিয়ে দেখা হয়েছে। বাজারের ভিতরের রাস্তা কতটা চওড়া, দমকলের ইঞ্জিন ঢোকার সুবিধা আছে কি না, এসবও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়েছে।
কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানান, অনেক পুর বাজার যথেষ্ট পুরনো ও অপরিকল্পিত। অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কতটা রয়েছে এবং কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে তা নির্ধারণ করতেই প্রতিটি বাজারে ফায়ার অডিট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দমকলের সুপারিশ অনুযায়ীই পুরসভা বাজার উন্নয়নের কাজ করবে।পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, আপাতত এই ১৩টি বাজারের রিপোর্ট হাতে এলেই কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দমকলের পরামর্শ মেনে প্রতিটি বাজারে ফায়ার মক ড্রিল আয়োজন, নতুন অগ্নি নির্বাপণ সরঞ্জাম স্থাপন এবং প্রয়োজনে জলাধার তৈরি করার দিকেও নজর দেওয়া হবে। পুরসভা মনে করছে, এই উদ্যোগের ফলে বাজারগুলি আগুন সংক্রান্ত বিপদ থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত থাকবে। একইসঙ্গে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের জীবন-সম্পত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে প্রশাসনের প্রস্তুতিও আরও মজবুত হবে।