• তামিলনাড়ু নিয়ে যাওয়ার আগে জংশন থেকে উদ্ধার ৩৪ যুবতী, কাজের টোপ দিয়ে পাচার? ধৃত ৩ আড়কাঠি
    বর্তমান | ২৮ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: রবিবার শিলিগুড়ি জংশন থেকে ৩৪ জন যুবতীকে উদ্ধার করল প্রধাননগর থানার পুলিস। কাজের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তামিলনাড়ু। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস এমনটাই জানতে পেরেছে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে প্রধাননগর থানা এক মহিলা সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। ক’দিন আগেই এনজেপি স্টেশন থেকে ৫৬ জন যুবতীকে জিআরপি ও আরপিএফ উদ্ধার করেছিল। তাদেরও ভিনরাজ্যে পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। 

    পুলিস জানিয়েছে, এদিন যে তিনজন ধরা পড়েছে তারা হল গৌতম রায়, পেট্রোস বেক ও জয়শ্রী পাল। গৌতম ও জয়শ্রী শিলিগুড়ির বাসিন্দা। অন্যদিকে, পেট্রোসের বাড়ি মেটেলি। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি পোশাক তৈরির কারখানায় কাজ দেওয়ার নাম করে মহিলাদের একটি বিলাসবহুল বাসে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। গোপন সূত্রে সেই খবর পাওয়ার পর প্রধাননগর থানার পুলিস জংশনে নাকা চেকিং শুরু করে। নির্দিষ্ট নম্বরের বাসটি এলে পুলিস থামিয়ে তল্লাশি শুরু করে। দেখা যায় ৩৪ জন যুবতী বাসে। তাঁদের জিজ্ঞাসা করে জানা যায়, তামিলনাড়ু নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিযুক্ত তিনজন সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেনি। তাদের কাছে উপযুক্ত নথিও ছিল না। তাই তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিস। আজ, সোমবার ধৃতদের শিলিগুড়ি আদালতে পাঠানো হবে। 

    শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিসের ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বনাথ ঠাকুর বলেন, একটি বাস থেকে ৩৪ জন যুবতী উদ্ধার হয়েছে। তাঁদের নিয়ে যাচ্ছিল এমন তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা যুবতীদের তামিলনাড়ু নিয়ে যাচ্ছিল। যদিও তাদের কাছে নথিপত্র ছিল না। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই তিনজনকে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। 

    জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন চা বাগানে পিছিয়ে পড়া যুবতীদের টার্গেট করেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বাইরে। প্রত্যেককে ভালো উপার্জন করার টোপ দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার পর প্রত্যেক যুবতীর বাড়ির লোকজনকে প্রধাননগর থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছে। এদিনই কয়েকজনের অভিভাবক আসেন। যাঁদের অভিভাবক এসেছিলেন, তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের দ্রুত তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে পুলিস জানিয়েছে। 

    পুলিসের তদন্তকারী অফিসারদের একাংশের দাবি, বারবার এই ধরনের ঘটনার পরে প্রত্যন্ত চা বাগানের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার প্রয়োজন রয়েছে। একাধিক মহলের দাবি, পিছিয়ে পড়া এলাকার মানুষকে সুখী জীবন উপভোগ করার টোপ দেওয়া হয়। এরপর প্রশিক্ষণের নামে ভিনরাজ্যে নিয়ে গিয়ে পাচার করা হয়। এমনই চক্র বর্তমানে উত্তরবঙ্গে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি এনজেপি থানা এলাকায় ইস্টার্ন বাইপাস থেকে ৫৬ জন যুবতীকে পাচার করার একটা চক্রের পর্দাফাঁস হয়েছে। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠার সময় তাঁদের উদ্ধার করেছিল জিআরপি। ওই ঘটনার পর আরও বেশি নজরদারি বাড়িয়েছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস। সেই সূত্র ধরেই এই সাফল্য বলে দাবি পুলিসের। যদিও এসব নিয়ে সাধারণ মানুষকে আরও বেশি সচেতন ও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে পুলিস।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)