কয়েক দিন ধরেই জলঘোলা হচ্ছিল। নদিয়া জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি জানিয়েই দিয়েছিলেন যে সোমবার কালীগঞ্জে শহিদ স্মরণ সভায় তাঁরা যাবেন না। এ দিন দেখা গেল, শুধু তিনি নন, নদিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতিও গরহাজির। কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য অধীর চৌধুরী সভা করতে এলেও নদিয়ার নেতারা সেখানে না যাওয়া দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যেই এসে গিয়েছে।
কালীগঞ্জ উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার দিন দুষ্কৃতীদের ছোড়া বোমায় কালিন্দি গ্রামে বছর দশেকের তামান্না শেখের মৃত্যু হয়। এ দিন তামান্না এবং আর জি করে নির্যাতিত-নিহত তরুণী চিকিৎসকের স্মরণে সভা ডেকেছিল যুব কংগ্রেস। গত কয়েক দিন ধরে সমাজমাধ্যমে এই কর্মসূচির যে সব পোস্টার দেখা গিয়েছে, তার কোনওটিতে লেখা ছিল ‘মুর্শিদাবাদ জেলা যুব কংগ্রেস’, কোনওটিতে ‘প্রদেশ যুব কংগ্রেস’।
তা দেখেই নদিয়া জেলার কংগ্রেস নেতাকর্মীদের একাংশ অধীরের বিরুদ্ধে সমাজমাধ্যমে ‘দলীয় স্বেচ্ছাচারিতা’, ‘সংগঠনের নিয়ম লঙ্ঘন’ এবং ‘রাজনৈতিক স্বজনপোষণ’-এর মতো নানা অভিযোগ তোলেন।কালীগঞ্জ উপনির্বাচনেও আহ্বান থাকা সত্ত্বেও অধীর প্রচারে আসেননি, বরং যারা প্রকাশ্যে দলবিরোধী কাজ করছে, তাদের উৎসাহ দিয়ে চলেছেন বলেও অভিযোগ করা হতে থাকে। যদিও প্রত্যুত্তরে অধীর জানিয়েছিলেন, এটা প্রদেশ যুব কংগ্রেসের কর্মসূচি, তিনি সেখানে আমন্ত্রিত মাত্র। মুর্শিদাবাদ জেলা যুব কংগ্রেসের তরফে বলা হয়, প্রদেশের তরফে প্রচার করছে মাত্র।
এ দিনের সভায় তাঁর গরহাজিরা প্রসঙ্গে নদিয়া জেলা যুব কংগ্রেসের সভাপতি টিপু সুলতান কোনও লুকোছাপা না করে সরাসরি বলেন, “আমরা কেউ ওই সভায় যাইনি। বরং গোটা বিষয়টির নিন্দা করছি। অধীরবাবু মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম থেকে লোকজন নিয়ে এসে সভা করছেন। এইভাবে সংগঠন চলতে পারে না।” এটা কি দলীয় কোন্দল নয়? টিপুর দাবি, “কোন্দল কি না জানি না, তবে কেউ কেউ সংগঠনটাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি বলে মনে করছে, কংগ্রেসের সংবিধান মানছে না। এ ভাবে চললে দলের ভিতরে ফাটল আরও গভীর হবে।”
নদিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি অসীম সাহা রবিবারেই বলেছিলেন, “এই সভার বিষয়ে প্রথম জানতে পারি ফেসবুকে একটি পোস্ট দেখে।” মুর্শিদাবাদ জেলা যুব কংগ্রেস নদিয়ায় এসে সভা করবে— এটা কোন নিয়মে হচ্ছে তা তাঁর জানা নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন। যদিও কালীগঞ্জ ব্লক যুব কংগ্রেস সভাপতি আবুল কাশেম জানান, যুব কংগ্রেসের এই কর্মসূচির ব্যবস্থাপনায় তাঁরাই রয়েছেন। অসীম এ দিনও বলেন, “শুরু থেকেই এটা মুর্শিদাবাদ জেলা যুব কংগ্রেসের কর্মসূচি বলে প্রচারিত হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে চোখের সমস্যায় চিকিৎসাধীন, তাই যাওয়া সম্ভব ছিল না।” প্রদেশ যুব কংগ্রেস কমিটির নেত্রী শাহিনা জাভেদ বলেন, “এই কর্মসূচির বিষয়ে আমাদের ওয়ার্কিং গ্রুপে আগেই জানানো হয়েছিল। সবাইকে ব্যক্তিগত ভাবে জানানো সম্ভব নয়।”