আলিপুর চিড়িয়াখানার বিশাল বড় অভিযোগ সামনে এসেছে। কয়েকশো প্রাণী নাকি উধাও হয়ে গিয়েছে চিড়িয়াখানার খাঁচা থেকে। আর এনিয়ে মামলা গড়াল কলকাতা হাইকোর্টে। অভিযোগ, আলিপুর চিড়িয়াখানায় নথিভুক্ত প্রাণীর সংখ্যা হঠাৎ করে ৬৭২ থেকে নেমে এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩৫১-তে। অর্থাৎ, ৩২১টি প্রাণী যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল!
এই ঘটনায় গুরুতর সন্দেহ প্রকাশ করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। মামলাকারী সংস্থার দাবি, এই এক বছরে নয়, গত ৩০ বছর ধরেই এই গোপন গরমিল চলেছে। ফলে আদালতের কাছে তাদের আবেদন, অন্তত গত দশ বছরের সমস্ত হিসেব খতিয়ে দেখা হোক। আদালত সূত্রের খবর, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হতে পারে ২৪ জুলাই। ঘটনার জেরে নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রও। আলিপুর চিড়িয়াখানায় পরিদর্শনে আসছে সেন্ট্রাল জু অথরিটির প্রতিনিধি দল। তারা শুধু খাঁচা গুনেই থামবে না, রাজ্য চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকেও বসবে বলে জানা গিয়েছে। তবে এই বিস্ময়কর উধাওয়ের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে রাজ্য বন দফতর ও চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, সংখ্যার এই অমিল কেবলমাত্র গণনার ভুল। তাঁদের দাবি, কেন্দ্রীয় সংস্থাকে যে তথ্য পাঠানো হয়েছিল তা ঠিকই ছিল। উল্টে, কেন্দ্রের পক্ষ থেকেই রিপোর্টে ভুল সংখ্যা প্রকাশ করা হয়েছে, যা সংশোধনের আবেদনও করা হয়েছিল।
তবে মামলাকারী সংস্থা তা মানতে নারাজ। তাঁদের অভিযোগ আরও গুরুতর। পশু সংখ্যা কমিয়ে আসলে চিড়িয়াখানার কিছু জমি ‘অপ্রয়োজনীয়’ হিসেবে দেখিয়ে তা বিক্রি করার ছক কষা হচ্ছে। কেউ কেউ আবার এই অদৃশ্য হয়ে যাওয়া প্রাণীগুলোর পাচার সংক্রান্ত সম্ভাবনার কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। প্রাণীর সংখ্যা নিয়ে এমন ধোঁয়াশা ও অভিযোগ এবার সেই হিসেব নিয়ে সরাসরি আদালতে মামলা হল। চিড়িয়াখানায় প্রাণী বাঁচানোর বদলে যদি প্রাণী ‘উধাও’ হয়ে যায়, তবে প্রশ্ন উঠবেই বলে জানাচ্ছেন পশু প্রেমীরা।